পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

614 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড পূর্ব পাকিস্তাদের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীই প্রমাণ করেছে যে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ যে কথা বলেছিল তা সম্পূর্ণ সত্য। দৈনিক পাকিস্তান, ১০ এপ্রিল, ১৯৭১। পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে সোভিয়েট মনোভাবের প্রতিবাদ সাংবাদিক সম্মেলনে ভুট্টো করাচী, ১৪ ই এপ্রিল (এপিপি)-পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের জনগণের পক্ষে আজ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে সোভিয়েট ইউনিয়নের মনোভাবের জোর প্রতিবাদ করেছেন। তিনি তার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বস্তৃতা করছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগনির বাণীকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নগ্ন হস্তক্ষেপ” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে গণচীনের ভূমিকাকে সঠিক এবং সময়নুগ বলে অভিহিত করে বলেন, সোভিয়েটের মনোভাব লেনিনবাদ ও মার্কসবাদের শিক্ষার পরিপন্থী। পদগর্নিও বাণীর জবাবে জাতিসংঘ সনদ ও বান্দুং নীতিতে বর্ণিত সদস্য দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি সোভিয়েট ইউনিয়নকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সোভিয়েট ইউনিয়ন জাতিসংঘ সনদ এবং বান্দুং নীতি ভুলে গিয়েছে কিনা জানি না। তবে তারা লেনিনের সমাজতন্ত্রের আদর্শ ভুলে গিয়ে থাকলে সেটাই হবে বিস্ময়কর। ভুট্টো বলেন, এটা সোভিয়েট ইউনিয়নের স্থপতি ও নির্মাতা ভি আই লেনিনের বৈদেশিক হস্তক্ষেপের প্রশ্নে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সম্পর্ক সংক্রান্ত বিখ্যাত নীতির বরখেলাপ। অথচ উক্ত নীতি হলো সোভিয়েট ইউনিয়নের অন্যতম প্রধান নীতি। ভুট্টো বলেন, সোভিয়েট ইউনিয়ন একটি বৃহৎ শক্তি প্রতিবেশী এবং পাকিস্তনের এক ভাল বন্ধু। পাকিস্তান তার সাথে ভাল সম্পর্ক চায় এবং এ লক্ষ অর্জনের জন্য পাকিস্তান সোভিয়েটের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার জোর প্রচষ্টো চালিয়েছে। এই প্রসংগে তিনি মন্ত্রী থাকাকালে সোভিয়েট ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে তার ব্যক্তিগত ঘভীর আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রে রাষ্ট্র সম্পর্কেও ক্ষেত্রে দেওয়া নেওয়ার উপদানটি খুবই জরুরী। তিনি বলেন, সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগনি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকট সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে টিঠি লিখেছেন, যে বিষয়টি পাকিস্তানের অভ্যান্তরীণ এখতিয়ারে ছিল এবং থাকবে। যে সংকট দেখা দিয়েছে, স্বভাবতঃই তার রাজনৈতিক সমাধানই পাকিস্তানেরা কাম্য হবে। নিশ্চিত যে, আলোচনার সূত্র বের করা হবে এবং রাজনৈতিক সমাধানে পৌছানোর নতুন প্রয়াস শুরু হবে। কেননা রাজনৈতিক নিষ্পত্তিই হলো স্থায়ী নিষ্পত্তি।