পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

636 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব নুরুল আমীন বলেন যে, বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত ও বহাল জাতীয় পরিষদ সদস্যদের মধ্যে সকালে হয়ত এখন দেশে উপস্থিত নেই, তবে ২৭শে ডিসেম্বর সকালের মধ্যে তাঁরা হয়ত পরিষদের অধিবেশনে বসার জন্য ফিরে আসতে পারেন। তিনি বলেন যে বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের অন্য কোন দলে যোগদানের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল আইন কোন বাধা নয়। তবে তিনি রাজনৈতিক দল আইনটিকে অবাধ গণতন্ত্রের পথে বাধাস্বারূপ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে তিনি জাতীয় পরিষদের ছ'জন পিপিপি প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রহস্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট বিষয়টি জনাব নূরুল আমিন বলেন যে, জাতীয় পরিষদেও ছ’দলীয় মৈত্রী জোট অব্যাহত থাকবে। পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (পিডিএম) মত এই জোট যাতে একজনের নেতৃত্বাধীনে থাকে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। -দৈনিক পাকিস্তান, ৭ নভেম্বর, ১৯৭১ চীন সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে ভট্টো ā করাচী, ১২ই নভেম্বর, (এপিপি)-পাক-ভারত উপ-মহাদেশের ভাগ্য ভিয়েনা, রোম বা প্যারিসে নির্ধারিত হবে না, এই উপ-মহাদেশের মাটিতেই নির্ধারিত হবে। পিপলস পার্টি প্রধান জনাব ভুট্টো ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি উপরোক্ত সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেন। তিনি আবদুল্লাহ হারুন রোডে এক বিরাট জনসমাবেশ বক্তৃতা করছিলেন। তিনি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অব্যাহত হস্তক্ষেপ এবং চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে সেই যুদ্ধ শুধু ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তেই সীমিত থাকবে না। তিনি বলেন, ভারত যেন তার সাম্প্রতিক পিকিং সফরের ফলাফলকে তার স্বপক্ষে মনে করে ভুল না বোঝে। কেননা চীন পুনরায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের নগ্ন হামলার মুখে পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছে। তাঁর পিকিং সফর কতটা সফল হয়েছে সময় আসলেই তা বোঝা যাবে। তিনি পূনরায় বলেন, আমার চীন সফর সফল হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি তাঁর বিদায় সম্বর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই, অস্থায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চী পেং ফেই-য়ের বিবৃতির উল্লেখ করেন। তারা বলেছেন, পাকিস্তানী প্রতিনিধিদলের মিশন সফল হয়েছে। আমার কর্তব্য সমাধান করে সন্তুষ্ট হয়ে আমি ফিরে এসেছি। তিনি ভারতীয় প্রতিরক্ষমন্ত্রী জগজীবন রামের সাম্প্রতিক বিবৃতির নিন্দা করেন। এই বিবৃতিতে জগজীবন রাম বলেছেন, ভারত পাকিস্তানের বড় বড় শহরগুলো দখল করার পর ছেড়ে দেবে না। ভুট্টো বলেন, যুদ্ধ শুরু হলে শুধু পাকিস্তান সেনাবাহিনীই যুদ্ধ করবেনা পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিক যুদ্ধ করবে। প্রতিটি গ্রাম, শহর ও সড়কে যুদ্ধ হবে। তিনি বলেন, তবে হোক দমাদম মস্তকালান্দার। ভুট্টো বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর হস্তক্ষেপ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, সোভিয়েটের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ভারতকে বহু খেসারত দিতে হবে। কেননা পাকিস্তানও এ ধরনে চুক্তি করেছিল। কিন্তু পরে তা নিরর্থক প্রমাণিত হয়েছে। আমি ভারতকে নোটিশ দিচ্ছি, অস্ত্র ত্যাগ কর। পাকিস্তানকে হুমকি দেয়া বন্ধ কর।