পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

640 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড উচিত। আর এখন তারা তাদের শক্তির বড়াই করে কথা বলছেন।” আমাদের দলের কর্মী ও নেতারা গত সাধারণ নির্বাচনের পর বহু স্থানে সরকারের হাতে কষ্ট পেয়েছেন, জেল খেটেছেন। আমাদের রেকর্ড একেবারে পরিষ্কার। না। ভুট্টো বলেন, তাঁর দল ক্ষমতার জন্য লালায়িত নয়। দেশের ও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য তারা যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যদি প্রধানমন্ত্রী অথবা প্রেসিডেন্ট পদ চান আমরা তা মেনে নেব। এমন কি জনগণ যদি চান, আমরা জেলে যেতেও প্রস্তুত। অবশ্য তিনি বলেন, আমরা কখনোই পুতুল সরকার মেনে নেবো না। যদি গোটা দেশের জনগণের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করা সম্ভব না হয় তাহলে দেশের অর্ধেক অংশের প্রকৃত প্রতিনিধিরা চলতি সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে আসুন। ভুট্টো বলেন, তার দল সংখ্যাগরিষ্ট দল এবং তারাই জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি বলে তার বিশ্বাস। ক্ষমতায় যাওয়ার পর আমি পূর্ব পাকিস্তানে যেতে পারি। সেখানকার জনসাধারণের সাথে দেখা করতে পারি এবং এক পাকিস্তানের ভিত্তিতে তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তিনি বলেন, আইনগত ও রাজনৈতিক কারণে তার দল উপ-নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। (ক)- পাকিস্তানকে রক্ষা করা। (খ) একটি গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র প্রণয়ন এবং (গ) একটি বেসামরিক সরকার গঠন করার জন্যই তাঁর দল উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধন্ত নেয়। তবে দুঃখের সঙ্গে এবং চোখ বন্ধ রেখে এই সিদ্ধন্ত নেয়া হয়। পিপলস পার্টি জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। সামরিক কার্যক্রম পিছনে পড়ে থাক আমরা তাই চেয়েছি। কারণ সামরিক পদক্ষেপ কোন সমস্যার সমাধান করে না। উল্টো তা জনসাধারণের মধ্যে বিদ্বেষ বাড়িয়ে তোলে। আমি প্রধানমন্ত্রীতু চাই না কিংবা প্রেসিডেন্ট হতে চাই না। আমি যদি লারকানা পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের সেবা করতে পারি তাতেই আমি খুশী থাকব। তিনি বলেন, গরীবের সমস্যা তা পূর্ব বা পশ্চিম পাকিস্তান যেখানকারই হোক এক। তারা সবাই শোষিত। সাত দলীয় জোট গরীবদের ক্ষমতারোহণে বাধ্য দিচ্ছে। তবে গরীবের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চলবে। আমরা বৃটিশ, রাজপুত, হিন্দু, শিখ, এমন কি জেনারেলদের যুগ দেখেছি। এবার আসবে গরীবের যুগ এবং কেউই তা রোধ করতে পারবে না। -দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ নভেম্বর ১৯৭১ ‘আক্রমণ করাই দেশ রক্ষার বড় কৌশল’ দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হোনঃ গোলাম আজম লাহের, ২৩শে নভেম্বর, (এপিপি)- পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামী আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম জনসাধারণের প্রতি রাজনৈতিক দলাদলি ভুল গিয়ে কার্যকরভাবে ভারতীয় হামলা মোকাবিলার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে এখানে পৌঁছে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করছিলেন। তার সাথে পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্ব মন্ত্রী মওলানা এ,কে,এম ইউসুফ এবং জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মওলানা আবদুর রহিমও ছিলেন।