পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

652 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শহর ও শহরের আশপাশে আরও ১৬টি শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে।..... -দৈনিক পাকিস্তান, ২৬ এপ্রিল ১৯৭১ শান্তি কমিটির কর্মতৎপরতা শুরু মুন্সীগঞ্জে পাক সেনাদের বিপুল অভ্যর্থনা জ্ঞাপন মুন্সীগঞ্জ, ১১ই মে (পিপিআই)- পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জোয়ানরা গত ৯ই মে মুন্সীগঞ্জ উপনীত হলে মুন্সীগঞ্জ মহকুমার জনসাধারণ ও সরকারী কর্মচারীরা তাদের আন্তরিক অভ্যর্থনা জনান। পিপিআই বার্তা সংস্থার বিশেষ সংবাদাতা এ কথা লিখেছেন। মেজর জাবেদের নেতৃত্বে পাকিস্তানী সেনাদল মুন্সীগঞ্জে উপনীত হলে সেখানকার বিভিন্ন শ্রেণীর লোক এই সেনাদলকে বিপুল অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। এর আগে জনসাধারণ সকল দালান কোটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাজার সমূহে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানী সেনাদল টাউনে উপনীত হলে সেখানে একটা আনন্দমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এরপর সেনাবাহিনীর অফিসাররা জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য এবং মুন্সীগঞ্জ টাউন কমিটির চেয়ারম্যান জনাব আবদুল হাকিম বিক্রমপুরীসহ স্থানীয় সরকারী কর্মচারী ও নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে জনাব বিক্রমপুরী সামরিক অফিসারদের মুন্সীগঞ্জ মহকুমার জনসাধারণের আন্তরিক ও পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। জনাব বিক্রমপুরী আরও বলেন, মুন্সীগঞ্জ, লৌহজং, টঙ্গীবাড়ী, গজারিয়া, শ্রীনগর এবং সিরাজদিখান নিয়ে গঠিত এই মহকুমার জনসাধারণ সব সময়ই আইনানুগ, শান্তিপ্রিয় এবং দেশপ্রেমিক। সকল দোকান পাট, সরকারী ও বেসরকারী অফিসগুলো তাদের স্বাভাবিক কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখে। কোন ব্যক্তিই ভয় ও আতংকে টাউন ছেড়ে যায়নি। সামরিক অফিসাররা বাজার পরিদর্শন করেন এবং দেখতে পান যে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্যাদির মূল্যও স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে রয়েছে। পণ্য দ্রব্যের সরবরাহও সন্তোষজনক রয়েছে। মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা আউস ফসল কাটছেন। কৃষকরা আবার অন্যান্য ধরনের ধানও রোপণ করেছেন। সেনাবাহিনীর দলটি মুন্সীগঞ্জের অভ্যন্তরে টঙ্গীবাড়ী, সিরাজদি খান, রামপাল (ঐতিহাসিক স্থান) এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ সফর করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, সেনাবাহিনী পদ্মা নদী দিয়ে মাওয়া, ভাগ্যকুল এবং কুমারভোগ অতিক্রম করাকালে লৌহজঙ্গে জনসাধারণ তাদের আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান। ইতিমধ্যে মুন্সীগঞ্জ কুমার ইউনিয়ন কাউন্সিলের সদস্য এবং শান্তিপূর্ণ জনসাধারণদের তাদের নিজ নিজ এলাকায় শান্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। তারা ভারতীয় দালালদের হাত থেকে তাদের নিজেদের ভূমি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। এদিকে শান্তি কমিটির নেতা জনাব আবদুল হাকিম বিক্রমপুর ইতিমধ্যেই ৬৮টি ইউনিয়ন কাউন্সিলের দানের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যেকটি এলাকার জনসাধারণই স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি সেনাদলের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছেন। জনসাধারণ ও সেনাদল সন্তুষ্টির সাথে তাদের মত বিনিময় করেন। -পূর্বদেশ, ১২ মে, ১৯৭১