জল’ ‘অনেকটা ময়দা’ বলে থাকি কিন্তু ‘অনেকটি’ মাটি বা দুধ বলা চলে না। কেননা, ‘টা’ শব্দে ব্যাপকতা বোঝায়, ‘টি’ শব্দে বোঝায় খণ্ডতা।
টু টুক্ টুকু: স্বল্পতাসূচক। সজীব পদার্থে এর ব্যবহার নেই। ছোটো গাধার বাচ্ছাকেও কেউ ‘গাধাটুকু’ বলবে না, পরিহাস ক’রে ‘মানুষটুকু’ বলা চলে।
সরু লম্বা জিনিসের সঙ্গে ‘গাছি’ ‘গাছা’র ব্যবহার: দড়িগাছা বেতগাছা হারগাছা। দুই-একটা ব্যতিক্রম থাকতে পারে, যেমন ‘চুড়িগাছি’। লম্বায়-ছোটো জিনিসে চলে না; ‘গোঁফগাছি’ কিছুতেই নয়। ‘টুকু’ চলে ছোটো জিনিসে, কিন্তু গড়নওয়ালা জিনিসে নয়। ‘চুনটুকু’ হয়, ‘পদ্মটুকু’ হয় না; আংটিটুকু হয় না, ‘পশম-টুকু’ হয়। সন্ন্যাসীঠাকুরের ‘রাগটুকু’ প্রভৃতি অবস্তুবাচক শব্দেও চলে। ‘একটুকু’ হয়, কিন্তু ‘দুটুকু’ ‘তিনটুকু’ হয় না। ‘ঐটুকু’ শব্দের সঙ্গে ‘খানি’ জোড়া যায়, ‘খানা’ যায় না; ‘একটুকখানি’, কিন্তু ‘একটুকখানা’ নয়। জীববাচক শব্দে খাটে না; ‘একটুক জীব’ নেই কোথাও।
আরও কয়েকটি নির্দেশক পদ আছে যা শব্দের পূর্বে বসে। তারা সর্বনাম জাতের যেমন: সেই এই ঐ।
১৬
বাংলা বিশেষ্যশব্দে সংস্কৃত বিশেষ্যশব্দের অনুস্বার বিসর্গ না থাকাতে কর্তৃকারকে চিহ্নের কোনো উৎপাত নেই। একেবারে নেই বলাও চলে না। কর্তৃপদে মাঝে মাঝে একারের সংকেত দেখা যায়, যেমন: পাগলে কী না বলে।
ভাষাবিজ্ঞানীরা এইরকম প্রয়োগকে তির্যকরূপ বলেন, এ যেন শব্দকে ত্যাড়চা করে দেওয়া। সব গৌড়ীয় ভাষায় এই তির্যকরূপ পাওয়া যায়, যেমন: ‘দেবে’ ‘জনে’ ‘ঘোড়ে’। বাংলায় বলি: দেবে মানবে