পাতা:বাংলার ব্রত - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

499 दां२छांद्र बड ব্ৰতের এবং হিন্দুয়ানির আচার-অনুষ্ঠানের চাপনে মানুষের মন যেখানে সব দিক দিয়ে অনুর্বর, নিরানন্দ এবং প্রাণহীন হয়ে পড়ে নি। এই তোষলা ব্ৰতের জীবন্ত দৃশুকাব্যটির সঙ্গে ছোটাে একটি শাস্ত্রীয় ব্ৰত মিলিয়ে দুয়ের মধ্যে কী নিয়ে যে পার্থক্য তা স্পষ্ট ধরা পড়বে। হরিচরণ ব্ৰত - বছরের প্রথম মাসে, খুব ছোটো মেয়েরা এই ব্ৰতা করছে চন্দন দিয়ে তামার টাটে হরিপাদপদ্ম লিখে । কিন্তু এই ব্ৰতে ছোটো মেয়ের মুখের কথা বা প্ৰাণের আনন্দ, এমন-কী ছোটো খাটো আশাটুকু পর্যন্ত নেই। পাকা-পাক কথা এবং জ্যাঠামিতে ভরা এই শাস্ত্রীয় ব্ৰতাঁট অত্যন্ত নীরস। হরির পাদপদ্মে পুজো দিয়ে পাঁচ-ছয় বছরের ছোটো মেয়েগুলি বর চাইছে-গিরিরাজ বাপ, মেনকার মতো মা, রাজা সোয়ামি, সভা-উজ্জল জামাই, গুণবতী বউ, রূপবতী বি, লক্ষ্মণ দেবর, দুর্গার আদর- ‘দাস চান, দাসী চান, রুপার খাটে পা মেলতে চান, সিথেয় সিদুর, - মুখে পান, বছর-বছর পুত্ৰ চান।” আর চান-‘পুত্র দিয়ে স্বামীর কোলে একগলা গঙ্গাজলে মরণ, এবং ‘উষোতে পারলে ইন্দ্রের শচীপনা, না পারলে কৃষ্ণের দাসীগিরি” । হরিচরণ ব্রত করছে এই যে মেয়েগুলি বৈশাখের, সকালবেলায়, আর শীতের সকালে শীর্ণধারা নদীতীরে, তোষলা ব্ৰতের দিনে, সরষে শিম এমনি নানা ফুলে সাজানো সারা ভাসিয়ে, স্রোতের জলে নেমে, সুৰ্যের উদয়কে এবং শস্যের উদগমকে কামনা করছে যে মেয়েণ্ডলি-এই দুই দলে কী বিষম পার্থক্য, দুই অনুষ্ঠানেই বা কী না তফাত । একদল একগলা গঙ্গাজলে আত্মহত্যায় উদ্যত ; অন্যদল বিশ্বচরাচরের সঙ্গে সূর্যের আলোতে হলুদ, আর সাদা ফুলে-ফুলে-ভরা খেতের মতো জেগে ওঠবার জন্যে আনন্দে উদগ্রীব। প্ৰত্যেক ঋতুর ফুলপাত, আকাশ-বাতাসের সঙ্গে এই-সব অশাস্ত্রীয় অথচ একেবারে খাটি ও আশ্চৰ্যরকম সৌন্দর্যে রসে ও শিল্পে পরিপূর্ণ বাঙালির সম্পূর্ণ নিজের ব্ৰতগুলির যে গভীর যোগ দেখা যাচ্ছে, তাতে করে এগুলিকে ঘৰ্মানুষ্ঠান বলব কি ষড়ঋতুর এক-একটি উৎসৰ বলব ঠিক করা শক্ত। চৈত্রের এই অশখপাতার ব্ৰত-যার সমস্ত অনুষ্ঠানের অর্থ হচ্ছে কিশলয় থেকে