পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉ab" বাংলা শব্দতত্ত্ব প্রথমাংশের আস্তক্ষরে যেখানে ই উ বা ও অাছে সেখানে দ্বিতীয়াংশে আকারস্বর যুক্ত হয় ; যেমন ঠিকঠাক মিটমাট ফিটফাট ভিরভার ঢিলেঢালা টিপচাপ ইত্যাদি ; কুচোকাচ গুড়োগাড়া ওঁতোগাতা কুটোকাটা ঘুষোঘাষা ফুটোফাট ভূজংভাজং টুকরো-ট্যকর হুকুম-হাকাম শুকনো-শাকনা ; গোলগাল যোগষাগ সোরসার রোখরাখ খোচখাচ গোছগাছ মোটমাট খোপখাপ খোলাখালী জোগাড়জাগাড় । কিন্তু যেখানে প্রথমাংশের আন্তক্ষরে আকার যুক্ত আছে সেখানে দ্বিতীয়াংশে ওকার জুড়িতে হয়। ইহার দৃষ্টান্ত পূর্বেই দেওয়া হইয়াছে ; জোগাড় শব্দের বেলায় হইল জোগাড়-জাগাড়, ডাগর শব্দের বেলায় হুইল ডাগর-ডোগর । একদিকে দেখে টুকরো-টাকরা হুকুম-হাকাম, অন্য দিকে হাপুস-হুপুস নাদুসকুদুস। ইহাতে স্পষ্ট দেখ! যাইতেছে, আকারে ওকারে একটা বোঝাপড়া আছে । ফিরিঙ্গি যেমন ইংরেজের চালে চলে, আমাদের সংকরজাতীয় অ্যাকারও এখানে আকারের নিয়ম রক্ষা করেন ; যথা, ঠ্যাকা-ঠোকা গ্যাটাগোটা অ্যালাগোলা । 馨 উল্লিখিত নিয়মটি বিশেষ শ্রেণীর কথা সম্বন্ধেই খাটে, অর্থাৎ যে-সকল কথায় প্রথমার্ধের অর্থ নির্দিষ্ট ও দ্বিতীয়ার্ধের অর্থ অনির্দিষ্ট ; যেমন ঘুষোঘাষা। কিন্তু ঘুযোধুষি কথাটার ভাব অন্য রকম, তাহার অর্থ দুই পক্ষ হইতে স্বম্পষ্ট ঘুষিচালাচালি ; ইহার মধ্যে আভাস ইঙ্গিত কিছুই নাই। এখানে দ্বিতীয়াংশের আদ্যক্ষরে সেইজন্ত স্বরবিকার হয় নাই । এইরূপ ঘুযোধুষি-দলের কথাগুলি সাধারণত অন্তোন্তত ৰুঝাইয়া থাকে ; কানাকানি-র মানে, এর কানে ও বলিতেছে, ওর কানে এ বলিতেছে। গলাগলি বলিতে বুঝায়, এর গলা ও, ওর গলা এ ধরিয়াছে। এই শ্রেণীর শব্দের তালিকা এইখানেই দেওয়া যাক : কষাকষি কচলা-কচলি গড়াগড়ি গলাগলি চটচটি চটকা-চটকি ছড়াছড়ি জড়াজড়ি টক্করা-টক্করি ডলাভলি ঢলাঢলি দলাদলি ধরাধরি ধন্তাধস্তি বকবিকি বলাবলি । অঁাটাঙ্গাটি অঁাচার্মাচি আড়াআড়ি আধাআধি কাছাকাছি কাটাকাটি ঘাটাঘাটি চাটাচাটি চাপাচাপি চালাচালি চাওয়া-চাওয়ি ছাড়াছাড়ি জানাজানি জাপটা-জাপটি টানাটানি ভাকাডাকি ঢাকাঢাকি তাড়াতাড়ি দাপাজাপি