পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা ব্যাকরণে বিশেষ বিশেষ্য S 36t হয়। ‘ছাতাটি কোথায়’ এই বাক্যে ছাতার প্রতি বক্তার একটু যত্ন প্রকাশ হয়, কিন্তু "ছাতাটা কোথায় বলিলে স্বত্ব বা অষত্ব কিছুই বোঝায় না। সাধারণত নামসংজ্ঞার সহিত “টা’ ‘টি’ বসে না । কিন্তু বিশেষ কারণে বেfক দিতে হইলে নামসংজ্ঞার সঙ্গেও নির্দেশক বসে। যেমন, হরিটা বাড়ি গেছে । সম্ভবত হরির বাড়ি যাওয়া বক্তার পক্ষে প্রীতিকর হয় নাই, টা তাহাই বুঝাইল । ‘রামটি মারা গেছে’, এখানে বিশেষভাবে করুণ প্রকাশের জন্ত টি বসিল । এইরূপ, খামটা ভারি দুষ্ট, শৈলটি ভারি ভালো মেয়ে। এইরূপে টি ও টা অনেক স্থলে বিশেষ পদের সঙ্গে বক্তার হৃদয়ের স্বর মিশাইয়া দেয় । বলা আবশ্যক মান্ত ব্যক্তির নাম সম্বন্ধে টি বা ট। ব্যবহার হয় না । সামান্ত্যতাবাচক বা সমষ্টিবাচক বিশেষ্যপদকেও বিশেষভাবে নির্দেশ করিতে হইলে নির্দেশক প্রয়োগ করা যায়। যেমন, ‘গিরিডির কয়লাটা ভালো", ‘বেহারের মাটিটা উর্বরা’, ‘এখানে মশাটা বড়ো বেশি’, ‘ভীম নাগ সন্দেশটা করে ভালো’ । কিন্তু শুদ্ধ অস্তিত্ব জ্ঞাপনের সময় এরূপ প্রয়োগ খাটে না ; বলা যায় না, ‘ভীমের দোকানে সন্দেশটা আছে।’ এখানে আর একটি লক্ষ্য করিবার বিষয় এই যে, যখন বলা যায় ‘বেহারের মাটিটা উর্বর।’ বা ‘ভীমের দোকানের সন্দেশটা ভালো’ তখন প্রশংসা সূচনা সত্ত্বেও "ট" নির্দেশক ব্যবহার হয় তাহার কারণ এই যে, এই বিশেষ্যপদগুলিতে ধে-সকল বস্ত বুঝাইতেছে তাহা পরিমাণে অল্প নহে। যখন আমরা কর্তৃবাচক বিশেষ্যকে সাধারণভাবে উল্লেখ করিয়া পরিচয়বাচক বিশেষ্যকে বিশেষ ভাবে নির্দেশ করি, তখন শেষোক্ত বিশেষ্যের সহিত নির্দেশক যোগ হয়। যেমন, ‘হরি মাহুষটা ভালো’, ‘বাঘ জন্তুটা ভীষণ । 嗜 সাধারণত গুণবাচক বিশেষ্যে নির্দেশক যোগ হয় না – বিশেষত শুদ্ধমাত্র অস্তিত্ব জ্ঞাপনকালে তো হয়ই না । যেমন, আমরা বলি, “রামের সাহস আছে । কিন্তু "রামের সাহসটা কম নয়’, ‘উমার লজ্জাট। বেশি? বলিয়া উমার বিশেষ লজ্জা ও রামের বিশেষ সাহসের উল্লেখকালে টা প্রয়োগ করি । ইংরেজিতে "this my’ প্রভৃতি সর্বনাম বিশেষণপদ থাকিলে বিশেষের পূর্বে আর্টিকল বসে না কিন্তু বাংলায় তাহার বিপরীত। এরূপ স্থলে বিশেষ করিয়াই নির্দেশক বসে। যেমন, ‘এই বইটা’, ‘আমার কলমটি’ । বিশেষণপদের সঙ্গে ‘টা’ ‘টি’ যুক্ত হয় না। যদি যুক্ত হয় তবে তাহ। Э е