পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ○切ア বাংলা শব্দতত্ত্ব

  • অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয় পর্যায়ক্রমে বৈষ্ণবপদাবলী প্রকাশের কাজে যখন নিযুক্ত হয়েছিলেন, আমার বয়স তখন যথেষ্ট অল্প। সময়নির্ণয় সম্বন্ধে আমার স্বাভাবিক অন্তমনস্কতা তখনো ছিল, এখনো আছে। সেই কারণে চিঠিতে আমার তারিখকে ধারা ঐতিহাসিক বলে ধরে নেন র্তার প্রায়ই ঠকেন । বর্তমান আলোচ্য বিষয়ের কাল অকুমান করা অনেকটা সহজ। বোম্বাইয়ে মেজদাদার কাছে যখন গিয়েছিলুম তখন আমার বয়স ষোলোর কাছাকাছি, বিলাতে যখন গিয়েছি তখন আমার বয়স সতেরো। নূতন-প্রকাশিত পদাবলী নিয়ে নাড়াচাড়ি করছি, সে আরো কিছুকাল পূর্বের কথা। ধরে নেওয়া যাক, তখন আমি চোদয় পা দিয়েছি। খণ্ড খণ্ড পদাবলীগুলি প্রকাশ্যে ভোগ করবার যোগ্যতা আমার তখন ছিল না ।•••

“পদাবলীর যে ভাষাকে ব্রজবুলি বলা হোত আমার কৌতুহল প্রধানত ছিল তাকে নিয়ে। শব্দতত্ত্বে আমার ঔৎসুক্য স্বাভাবিক । টীকায় ষে শব্দার্থ দেওয়া হয়েছিল তা আমি নিবিচারে ধরে নিই নি। এক শব্দ যতবার পেয়েছি তার সমুচ্চয় তৈরি করে যাচ্ছিলুম। একটি ভালো বাধানো খাতা শব্দে ভরে উঠেছিল। তুলনা করে আমি অর্থ নির্ণয় করেছি।...” জীবনস্মৃতিতে “ভাকুসিংহের কবিতা” অধ্যায়ে লিখিয়াছেন— “শ্ৰীযুক্ত অক্ষয়চন্দ্র সরকার ও সারদাচরণ মিত্র মহাশয় -কর্তৃক সংকলিত প্রাচীন কাব্যসংগ্ৰহ আমি বিশেষ আগ্রহের সহিত পড়িতাম । তাহার মৈথিলীমিশ্রিত ভাষা আমার পক্ষে দুর্বোধ ছিল। কিন্তু সেইজন্যই এত অধ্যবসায়ের সঙ্গে আমি তাহার মধ্যে প্রবেশচেষ্টা করিয়াছিলাম ।” এই 'অধ্যবসায়ে’র অন্ততম নিদর্শন ১২৮৮ সালের ভারতীপত্রে প্রকাশিত ‘প্রাচীনকাব্যসংগ্রহ (বিদ্যাপতি ), ‘প্রাচীনকাব্যসংগ্রহ/উত্তর-প্রত্যুত্তর’, ‘বিদ্যাপতির পরিশিষ্ট’ প্রবন্ধ । শ্রাবণ ভাদ্র ও কাতিক সংখ্যায় এই আলোচনাবলী প্রকাশিত হইয়াছিল ; কুচীপত্রে বা প্রথম প্রবন্ধে লেখকের নাম নাই ; দ্বিতীয় সংখ্যায় আলোচনা-প্রসঙ্গে ‘শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রস্তাব-লেখক । এইরূপ উল্লেখ আছে। ‘বিদ্যাপতির পরিশিষ্ট’ স্বাক্ষরিত প্রবন্ধ ; এই প্রবন্ধেও প্রথম প্রবন্ধটি যে তাহার রচনা সে কথা রবীন্দ্রনাথ উল্লেখ করিয়াছেন । এই প্রসঙ্গে ভ্রষ্টব্য জিজ্ঞাসা ও উত্তর’, ভারতী, জ্যেষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ১২৯•, বিভাপতি প্রসঙ্গ ।