পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাষার ইঙ্গিত ১১৭ বিপরীতাৰ্থক শৰ জুড়িয়া সমগ্রতা ও বৈপরীত্য বুঝাইবার দুষ্টাস্ত —আগাগোড়া, ল্যাজামুড়ো, আকাশপাতাল, দেওয়াখোওয়া নরমগরম, আনাগোনা, উন্টোপাট, তোলপাড়, আগাপাস্তাড়া । এই যত প্রকার জোড়াশব্দের তালিকা দেওয়া গেছে সংস্কৃত সমাসের সঙ্গে তাহাদের বিশেষত্ব এই যে, শব্দগুলির যে অর্থ তাহাদের ভাবট। তাহার চেয়ে বেশি এবং এই কথার জুড়িগুলি যেন একেবারে চিরদাম্পত্যে বাধা—বাঘভাল্লুক না বলিয়া বাঘসিংহ বলিতে গেলে একটা অত্যাচার হইবে । বনজঙ্গল এবং ঝোপঝাড় শব্দকে বনঝাড় এবং ৰোপজঙ্গল বলিলে ভাষা নারাজ হয় অথচ অর্থের অসঙ্গতি হয় না । এইখানে ইংরেজীতে যে সকল ইঙ্গিত বাক্য প্রচলিত আছে তাহার যে কয়েকটি দৃষ্টান্ত মনে পড়িতেছে উল্লেখ করিতে ইচ্ছা করি। বাংলার সহিত তুলনা করিলে পাঠকেরা সাদৃপ্ত দেখিতে *[[Coal Nick-nack, riff raff, wishy-washy, dilly-dally, shilly-shally, pit-a-pat, bric--abrac. এই উদাহরণগুলিতে জোড়াশব্দের দ্বিতীয়াদ্ধে আকারের প্রাদুর্ভাব দেখা যাইতেছে। আমরা পূর্বেই দেখিয়াছি, বাংলাতেও এইরূপ স্থলে শেষার্দ্ধে আকারটাই আসিয়া পড়ে। যেমন, হো-হা, জো-জা, জোর-জার । কিন্তু যেখানে প্রথমার্দ্ধে আকার থাকে দ্বিতীয়াদ্ধে সেখানে ওকারের প্রচলনই বেশি, ষেমন ঘ-ঘো, টানটোন, টায়-টোয়, ঠারে-ঠোরে, । সব শেষে যদি ইকার থাকে তবে মাঝের ওকার উ হইয়া যায়, যেমন জারি-জুরি ।