পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

le/2 মাপেরই। জলের পরিমাণ যতটা, নদীপথের গভীরতা ও বিস্তার সেই অনুসারেই হইয়া থাকে স্বয়ং ভগীরথও আগে লম্বা চওড়া পথ কাটিয়া তার পরে গঙ্গাকে নামাইয়া আনেন নাই । বাঙালী যে ইতিপূৰ্ব্বে কেবলি চাষবাস এবং ঘরকন্নার ভাবনা লইয়াই কাটাইয়াছে এ কথা সম্পূর্ণ সত্য নহে। কিন্তু ইতিপূর্বে তার চেয়ে বড়ো কথা র্যারা চিন্ত| করিয়াছেন তারা বিশেষ সম্প্রদায়ে বদ্ধ । তারা প্রধানত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের দল । তাদের শিক্ষা এবং ব্যাবসা, দুইয়েরই অবলম্বন ছিল সংস্কৃত পুথি । এইজন্য ঠিক বাংলা-ভাষায় মনন করা বা মত প্রকাশ করা তাদের পক্ষে স্বাভাবিক ছিল না। তাই সেকালের গদ্য উচ্চ চিস্তার ভাষা হইয়া উঠিতে পারে নাই । অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালেও আমাদের দেশে ভাষা ও চিন্তার মধ্যে এইরূপ দ্বন্দ্ব চলিয়। আসিয়াছে । যারা ইংরেজিতে শিক্ষা পাইয়াছেন তাদের পক্ষে ইংরেজিতেই চিন্তা করা সহজ ; বিশেষত যে সকল ভাব ও বিষয় ইংরেজি হইতেই তারা প্রথম লাভ করিয়াছেন সেগুলা বাংলা-ভাষায় ব্যবহার করা দুঃসাধ্য। কাজেই আমাদের ইংরেজি-শিক্ষা ও বাংলা-ভাষা সদরে অন্দরে স্বতন্ত্র হইয়া বাস করিয়া আসিতেছে । এমন সময় যারা শিক্ষার সঙ্গে ভাষার মিল ঘটাইতে বসিলেন বাংলার চলিত গদ্য লইয়া কাজ চালানো তাদের পক্ষে অসম্ভব হইল। শুধু যদি শব্দের অভাব হইত তবে ক্ষতি ছিল না কিন্তু সব চেয়ে বিপদ এই যে, নূতন শব্দ বানাইবার শক্তি প্রাকৃত