১৩৮ ৷ শৰদতত্ত্ব বাংলা ভাষার অপর একটি একত্ব নির্দেশক চিহ্ন খানা, খানি । “খগু” শৰ হইতে উহার উৎপত্তি। এখনও বাংলায় “খান-খান” শব্দের দ্বারা খণ্ড খণ্ড বুঝায় । ইহা হইতে মনে হইতে পারে যে, এক একটি সমগ্র বস্তুকে বুঝাইতে “টা” চিহ্নের প্রয়োগ এবং এক একটি খণ্ডকে বুঝাইতে *খানা” চিহ্নের প্রয়োগ হইয়া থাকে । গোড়ায় কী ছিল বলিতে পারি না এখন কিন্তু এরূপ দেখা যায় না । আমরা বলি কাগজখানা, শ্লেটখানা । এই কাগজ ও শ্নেট সমগ্র পদার্থ হইলেও আসে যায় না। কিন্তু দেখা যাইতেছে যেসকল সামগ্রী দীর্ঘ প্রস্থ বেধে সম্পূর্ণ, সাধারণত তাহদের সম্বন্ধে “খানা” ব্যবহার হয় না। যে জিনিষকে প্রস্থের প্রসারের দিক হইতেই দেখি, লম্বের বা বেধের निक হইতে নয় প্রধানত তাহারই সম্বন্ধে “খানা” “খানি”র যোগ । মাঠখানা ক্ষেতখানা ; কিন্তু পাহাড়খানা নদীখানা নয় । থালখানা, খাতা খানা ; কিন্তু ঘটিখানা বাটিখানা নয়। লুচিখানা, কচুরিখানা ; কিন্তু সন্দেশখানা মেঠাইখানা নয় । শালপাতাখানা, কলাপাতাখানা ; কিন্তু আমখানা কাটালখানা নয় । এই যে নিয়মের উল্লেখ করা গেল ইহা সৰ্ব্বত্র খাটে না । যে জিনিষ পাতলা নহে তাহার সম্বন্ধেও “খানা” ব্যবহার হইয়া থাকে। যেমন খাটখানা, চৌকিখানা, ঘরখানা, নৌকাখানা। ইহাও দেখা গিয়াছে, এই “খানা” চিহ্নের ব্যবহার সম্বন্ধে সকলের অভ্যাস সমান নহে । o
পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।