পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা নির্দেশক లివి তবে “খানার” প্রয়োগ সম্বন্ধে কয়েকটা সাধারণ নিয়ম বলা যায়। জীব সম্বন্ধে কোথাও ইহার ব্যবহার নাই ; গোরুখান৷ ভেড়াখানা হয় না। দেহ ও দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্বন্ধে ইহার ব্যবহারে বাধা নাই। দেহখান, হাতখানা, পাখানা । বুকখানা সাত হাত হয়ে উঠল ; মায়ের কোলখানি ভ’রে আছে ; মাংসখানা ঝুলে পড়েছে ; ঠোটখানি রাঙা ; ভুরুথানি বাকা । অরূপ পদার্থ সম্বন্ধে ইহার ব্যবহার নাই। বাতাসখানা বলা চলে না ; আলোখানাও সেইরূপ ; কারণ, তাহার অবয়ব নাই । যত্বখানা, আদরখানা, ভয়খানা, রাগখানা হয় না। কিন্তু ব্যতিক্রম আছে ; যথা, ভাবখানা, স্বভাবখানা, ধরণখানা, চলনখানি । যে সকল বস্তু অবয়ব গ্রহণ না করিয়া তরল বা বিচ্ছিন্নভাবে থাকে তাহদের সম্বন্ধে “খান” বসে না । যেমন, বালিখানা, ধূলোখানা, মাটিখানা, দুধখানা, জলখানা তেলখানা হয় না। ধূলা কাদা তেল জল প্রভৃতি শব্দের সহিত “এক” শব্দটিকে বিশেষণরূপে যোগ করা যায় না। যেমন, একটা ধূলা বা একটা জল বলি না । কিন্তু “অনেক” শব্দটির সহিত এরূপ কোনো বাধা নাই । যেমন, অনেকটা জল বা অনেকখানি জল বলা চলে। বলা বাহুল্য এখানে “অনেক” শব্দ দ্বারা সংখ্যা বুঝাইতেছে না— পরিমাণ বুঝাইতেছে । এখানে বিশেষরূপে লক্ষ্য করিবার বিষয় এই যে, এরূপ স্থলে আমরা খানি ব্যবহার করি ; খানা ব্যবহার করি না । “অনেকখানি দুধ” বলি, “অনেকখানা দুধ” বলি না। এস্থলে দেখা