পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শবদতত্ত্ব سb ৪র্থ। ক্রিয়াপদে স্থলবিশেষে আকারের উচ্চারণ “ও” হইয়: যায়। যেমন, হ’লে, ক’রলে, প’ল, ম’ল, ইত্যাদি অর্থাৎ যদি কোনো স্থলে অ-য়ের পরবর্তী ই অপভ্রংশে লোপ হইয়া থাকে তথাপিও পূর্ববর্তী অয়ের উচ্চারণ “ও” হইবে। “হইলে”-র অপভ্রংশ “হ’লে” ; “করিলে”-র অপভ্রংশ “ক’বুলে” ; “পড়িল” “প’ল ; "মরিল” “ম’ল” । “করিয়া”র অপভ্রংশ “ক’রে,” এই জন্য, “ক”য়ে ওকার যোগ হয়—কিন্তু সমাপিকা ক্রিয়া “করে” অবিকৃত থাকে। কারণ “করে” শব্দের মধ্যে “ই” নাই এবং ছিল না । ৫ম । ঋফলা বিশিষ্ট বর্ণ পরে আসিলে তৎপূর্বের অকার “ও” হয় । যথা, কর্তৃক, ভর্তু, মস্বণ, যকৃত, বক্তৃতা ইত্যাদি । ইহার কারণ স্পষ্ট পড়িয়া রহিয়াছে, বঙ্গভাষার ঋ ফলার উচ্চারণের সহিত ইকারের যোগ আছে । ৬ষ্ঠ । এবারে যে নিয়মের উল্লেখ করিতেছি তাহ নিয়ম কি নিয়মের ব্যতিক্রম বুঝা যায় না। স্বাক্ষর বিশিষ্ট শব্দে দস্ত্য ন অথব} মুৰ্দ্ধণ্য ণ পরে থাকিলে পূর্ববর্তী অকার ও হইয়া যায়। যথা, বন, ধন, জন, মন, মণ, পণ, ক্ষণ। ঘন শব্দের উচ্চারণের স্থিরতা নাই। কেহ বলেন—ঘনো দুধ, কেহ বলেন ঘোনো দুধ । কেবল গণ এবং রণ শব্দ এই নিয়মের মধ্যে পড়ে না । তিন অথবা তাহার বেশি অক্ষরের শব্দে এই নিয়ম খাটে না । যেমন কনক, গণক, সনসন, কনকন। তিন অক্ষরের অপভ্রংশে যেখানে দুই অক্ষর হইয়াছে সেখানেও এ নিয়ম খাটে না । যেমন, “কহেন” শব্দের অপভ্রংশ