পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বরবর্ণ ‘অ’ ১৭ এই অক্ষরের নাম হইয়াছে ক্ষিয়। এখনো পূৰ্ব্ববঙ্গের লোকেরা ‘ক্ষ’র সঙ্গে য-ফলা যোগ করেন ; এবং তাহাদের দেশের য-ফলা : উচ্চারণের প্রচলিত প্রথানুসারে পূর্ববর্তী বর্ণে ঐ-কার যোগ করিয়া দেন। যেমন, র্তাহারা 'লক্ষটাকাকে’ বলেন 'লৈক্ষ্য টাকা । যাহা হৌক মোটের উপর এই নিয়মটিকে পাক নিয়ম বলিয়া ধরা যাইতে পারে। যে দুই একটা ব্যতিক্রম আছে পূৰ্ব্বে অন্যত্র তাহা প্রকাশিত হওয়াতে এস্থলে তাহার উল্লেখ করিলাম না। দেখা যাইতেছে ‘ও’ স্বরবর্ণের প্রতি বাংলা উচ্চারণের কিছু বিশেষ ঝোক আছে। প্রথমত আমরা সংস্কৃত ‘অ’র বিশুদ্ধ উচ্চারণ রক্ষা করি নাই। আমাদের ‘অ’, সংস্কৃত ‘অ’ এবং ‘ও’র মধ্যবৰ্ত্তী। তাহার পরে আবার সামান্য ছুতা পাটলেই আমাদের ‘অ’ সম্পূর্ণ ও হইয়া দাড়ায়। কতকগুলি স্বরবর্ণ আছে যাহাকে সন্ধিস্বর বলা যাইতে পারে। যেমন 'অ’ এবং ‘উ'র মধ্য পথে ‘ও’ ; ‘অ’ এবং ‘ই’র সেতুস্বরূপ ‘এ’ ; যখন এক পক্ষে ‘ই’ অথবা ‘এ’ এবং অপর পক্ষে “অ’ তখন ‘অ্যা’ তাহাদের মধ্যে বিরোধ ভঞ্জন করে। বোধ হয় ভালো করিয়া সন্ধান করিলে দেখা যাইবে বাঙালীর উচ্চারণকালে এই সহজ সন্ধিস্বরগুলির প্রতিই বিশেষ মমত্ব প্রকাশ করিয়া থাকে। ১২৯৯ ৷