পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
১৯২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

দেবতাকে ঘিরে রয়েছে। বীণার অনেকগুলো ঘাট স্পর্শ করে রাগরাগিণী যেমন ভাবে চলে তেমনি চলেছে মানব-সমাজের ঘাটে ঘাটে স্রোত বইয়ে এই যৌবন অবস্থার শিল্প । কোথাও মন্দিরের ঘাটে লাগলো স্রোত-এক রকম তরঙ্গ উঠলো রসের ধারায় ; কোথাও লাগলে স্রোত রাজ-অট্টালিকায় বিলাস-ভবনে—সেখানে আর এক রকম তরঙ্গ উঠলো শিল্পের ধারায় ;—এই রকম নানা বঁাকে বাকে আঁকতে বাকতে জোয়ার ভাটার ছন্দ ধরে চলেছে শিল্প দেশের জাতির ধমের কমের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত হ’য়ে যৌবনাবস্থায় । দেশ কাল ধম জাতি ইত্যাদি ভেদে মানুসের প্রবৃত্তির ধেগ এবং সেই সঙ্গে তার শিল্পও নিয়ন্ত্রিত হ’য়ে বিচিত্র পথ অনুসরণ করে চলে বিচিত্র ভাবাপন্ন হ’য়ে বিচিত্র রূপে । দেশ বিদেশে শিশু-চরিত্রে যেমন তেমনি পৃথিবীর আদিম জাতিদের মধ্যে যে সমস্ত শিল্প, তাদের মধ্যে একটা মিল দেখা যায় ; সেখানে পূর্ব-পশ্চিম ভেদে ধর্ম ও সমাজপদ্ধতি ভেদে শিল্পকার্য সমূহের তারতম্য বড় একটা সুস্পষ্ট ভাবে বিদ্যমান থাকে না, শুধু শিল্পের ধারা যখন নদী হ’য়ে ব’য়ে চল্লো মানুষের ঘরের কাছ দিয়ে, দেশের বুকের উপর দিয়ে, তখনি দেখি শিল্পের নানারূপ বিভাগ সুনির্দিষ্ট হ’য়ে শিল্পের নানা মন্ত্র তন্ত্র প্রথা প্রণালীর দ্বারা এক এক রকম ছ'চি পেয়ে চলেছে । আমাদের দেশে বৌদ্ধ হিন্দু মোগল ইত্যাদি—ওদের দেশে গ্ৰীক রোম খৃষ্ট তুর্ক ইত্যাদি নানা ধমের নানা টানে যে প্রকার বিভিন্ন ছ'চ পেলে শিল্প, তাতে করে শিল্পের একটা জাতি-বিভাগ স্পষ্ট হ’য়ে উঠলো, অথচ শিল্প হিসেবে তাদের মধ্যে আসলে পার্থক্য নেই। নদীর জল সব নদীতেই জল ছাড়া আর তো অন্য পদার্থ নয়—হ্ধও নয় দইও নয় ক্ষীরও নয় জল মাত্র ; তেমনি শিল্প সব দেশেরই, শুধু রূপ ও নাম মাত্র ভিন্ন হ’য়ে গেছে—দেশ কাল পাত্র ভেদে যেমন যাতে ধারা বইলে তারি হিসেব নিয়ে । 8 ஆ. নৌকা সব দেশেই নৌকা, রথ সব দেশেই রথ ; কিন্তু বমর্ণ দেশের নৌকা, বাঙলা দেশের নৌকা, মিশর দেশের নৌকা, গ্রীস দেশের নৌকা, সবার ভিন্ন ভিন্ন গঠন-প্রণালী হয়েছে। ছ'চ বদলায়,