পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২০২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

নোটিশের মতো আসে—পুরোনো ঘটি বাটি বেচেও যার দেন শোধ করতে হয়। শিল্পের উৎপত্তির পক্ষে এক একটা প্রতিকূল অবস্থা আসে, কিন্তু এ কথাও ঠিক যে এই সঙ্কটের সময়েই দেশ নিজের যা ছিল নিজের যেটুকু আছে এবং নিজকে যা পেতে হবে ভবিষ্যতে, তার বিষয়ে চিন্তা করে । , দাত থাকতে র্দাতের মর্যাদা বোঝা যায় না, শিল্প থাকতে শিল্পের মর্যাদা ঠিক দেয় না লোকে । শিল্পের স্থবিরাবস্থা নেই, এই পৃথিবীর মতোই সে প্রাচীনা অথচ চিরযৌবন । মানব-প্রকৃতি বিশ্ব-প্রকৃতি এই দুয়ের মিলনে শিল্পের উৎপত্তি সুতরাং তার গতি কোন দেশে কোন কালে বন্ধ হবার উপায় নেই। শিল্প যে এক কালের মধ্যেই বদ্ধ থাকবে তারও উপায় নেই। স্থষ্টির একটা অংশ শিল্প, বাতাসের মতে জলধারার মতে মহাকালের সহচর হয়ে মানুষের ক্ষণিক জীবনের মুহূতগুলো বৰ্তমান থাকে, শিল্পকার্য মানুষের অস্তরের এবং বাহিরের প্রকৃতির সাক্ষী স্বরূপ, মূহুতো মূহুর্তে নতুন পথ চলতে হয়, নতুন কথা লিখতে হয়, অমৃতের পাত্র পরিপূর্ণ করে দিতে হয় বাইরের এবং অস্তরের রসে। যদি স্থপতির শিল্প পাথরকে মাটিকে স্পর্শ করলে, ধূলো হ’ল মধুমান—“মধুমান পাৰ্থিবো রজঃ”, গানের মুর লাগলো গিয়ে বাতাসে, বাতাস মধুময় হ’ল— “মধুবাতাঃ”, শিল্প ভাবসিন্ধুতে রসসিন্ধুতে ডুব দিলে, লবণায়ু সেও মধুর স্বাদ পেয়ে গেল—“মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ”। শিল্প-প্রবৃত্তি অলৌকিক চমৎকারী কম করতে প্রবৃত্ত করায় শিল্পীকে—বাইরে এনে ফোটাতে অস্তরের মধ্যে যে ফুল গোপন রয়েছে তাকে । চারিদিকের আবহাওয়ায় মধুমাস লাগে যখন ফুল ফল ধরে আপনা হতেই তখন গাছের মধ্যে প্রবৃত্তি জাগে প্রকাশের ।