পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুন্দর २०१ মেঘের বুক থেকে মাটির বুকে নেমে এল, মানুষ বল্লে, ময়ুর ও বক এর দুইটিই সুন্দর। আবার এল একদিন জলের ধারে সারস পাখী—মেঘ যাকে নিজের গায়ের রংএ সাজিয়ে পাঠালে। এমনি একের পর এক সুন্দর দেখতে দেখতে মানুষ বর্ষাকাল কাটালে, তারপর শরতে দেখা দিলে আকাশে নীল পদুমালার দুটি পাপড়িতে সেজে নীলকণ্ঠ পাখী, এমনি ঋতুর পর ঋতুতে সুন্দরের সন্দেশ-বহ আসতে লাগলে একটির পর একটি মানুষের কাছে—সব শেষে এল রাতের কালো পাখী আকাশপটের আলো নিভিয়ে অন্ধকার ছখানি পাখন মেলে—পৃথিবীর কোনো ফুল, আকাশের কোনো তারার সঙ্গে মানুষ তার তুলনা খুজে না পেয়ে অবাক হয়ে চেয়ে রইলো ! এই যে একটি মানুষের কথা বল্লেম, এমন মানুষ জগতে একটি দুটি পাই যার কাছে সুন্দর ধরা দিচ্ছেন সকল দিকে নানা সাজে নানা রূপে বর্ণে স্বরে ছন্দে। ময়ুরই সুন্দর, কলবিষ্ক নয়, কাক নয় এই কথা যার বলছে এমন মানুষই পৃথিবী ছেয়ে রয়েছে দেখতে পাই । সুরের নানা ভঙ্গি দখল না করে আমাদের গাইয়ে মুখভঙ্গিটাতেই যখন পাকা হয়ে উঠলে, তখন সভার লোকে দূর ছাই করে তাকে গঞ্জন দিলে, সুরের সৌন্দর্য ফুটলো না, তার চেষ্টায় বটে কিন্তু ঐ মুখভঙ্গি অঙ্গভঙ্গির মধ্যে আর একটা জিনিষ ফুটলো যেটি হয়ে উঠলো একখানি সুন্দর ছবি ওস্তাদের ! g আর্টিষ্টদের কেউ কেউ ভুল করে’ বলেন “সুন্দরের সন্ধানী” । সুন্দর যাকে ঘিরে থাকে না সেই বেড়ায় সুন্দরের খোজে গড়ের মাঠে, জু গার্ডেনে, মিউজিয়ামে,—এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে। সুন্দর কি, সুন্দর কি নয় এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক লেখা-লেখি এবং সৌন্দর্যতত্বের রসতত্ত্বের যত পুথি আছে তার বচন ধরে ধরে যেন লাঠি হাতে চলা । ততক্ষণ সুন্দর যতক্ষণ কাছে নেই, সুন্দর এলেন তো ও সব ফেলে চল্লো মন স্বচ্ছন্দে অবাধগতিতে সব তর্ক ভুলে । আজ রাজা যখন নগরে প্রবেশ করেছিলেন তখনকার কথা কার না জানা আছে ? ফুল ফুটে গিয়েছিল সেদিন আপনা হতেই। মধুকরের কাছে যে ভাবে হাওয়া এসে মধুর খবর দিয়ে যায় সেইভাবে খবর আসে সুন্দরের যে লোক যথার্থ আর্টিষ্ট তার কাছে, তাকে ঘুরে বেড়াতে হয় না সুন্দরকে খুঁজে খুঁজে