পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসুন্দর ২১৭ নই, সুন্দরে অসুন্দরে মিলে এখানে লীলা চলেছে। যার কোন ঐ নই তা বিস্ত্রী এটা ভারি সহজ কথা, কিন্তু একেবারে চরিত্রহীন স্বাদহীন শ্ৰীহীন তাকে কোথায় খুজে পাই তা কি কেউ বলে দিতে পারে ? আমি কিছুদিন আগে অমুখে পড়ে আবার আস্তে আস্তে সেরে উঠলেম, সেই সময়ে আমার এক হোমিওপু্যাথ ডাক্তার বন্ধু এসে আমার কাযকম ছবিতাক বই-লেখা গানবাজনা গল্পগুজব সমস্ত বন্ধ করে আমাকে নিরবচ্ছিন্ন বিস্বাদ জীবনযাত্র নির্বাহ করতে উপদেশ দিলেন। শুনে আমার বুকের রক্ত তার সব রঙ হারিয়ে হোমিওপ্যাথি অযুধের একটি ফোটাতে পরিণত হবার যোগাড় হ’ল । দেখলেম ভারি বিশ্রী সেই মনের অবস্থা,—এর চেয়ে অসুন্দর কোন কিছুকে বোধ করিনি আর কোন দিন । এই ভাবের অবিচিত্র জীবনযাত্রা অনেক মানুষকে যে নিবাহ করতে হচ্ছে না তা নয়। একটা কায করতে করতে কায করার স্বাদ ক্রমে ক্ষয় হ’য়ে গেল, তখন কলের মতে কায করে চল্লো জীবন্ত মানুষ— আফিসে যায়, সংসারের ভার বয়, ছবি কবিতাও লেখে, কিন্তু কোন কিছুরই স্বাদ পায় না মন-রসন । ছেলেগুলো নিত্য পাঠশালায় যে যেতে চায় না তার কারণ পড়তে যাওয়া-আসার সঙ্গে পড়ার ও স্বাদ পাচ্ছে না ছেলেগুলি, সেই সময়ে তাদের মন উড়, উড় করতে থাকলে এমন যে, তারা দেবতার কাছে নানা অসুন্দর ও অশুভ কামনা জানায়, নিজে হঠাৎ বড়ো হ’ক, বুড়ো মাষ্টার হঠাৎ মরুক ইত্যাদি ইত্যাদি—যে ক'টি অসুন্দরকে দেখে’ বুদ্ধদেবও ডরিয়েছিলেন, তাদের ভরি সুন্দর দেখলে ছেলেগুলি । শুভ যা তা সুন্দর, অশুভ যা তা অসুন্দর এমনি একটা মত আছে । যখন দেখছি কোন একটি পতঙ্গের কাছে রাত্রির অন্ধকার ভাল ঠেকলো না, সে গিয়ে আত্মবিসর্জন করলে আগুনের কাছে, বলি যে, আগুন তাকে পোড়ায়নি সোনার রঙে রাঙিয়ে দিয়েছিল তার ছুখানি ডানা । প্রেমের সুন্দর অগ্নিশিখা নয়, এ যে অসুন্দর মৃত্যুর লেলিহান জিহবা, সেটা বোঝারও সময় পেলে না পতঙ্গটি—এমনি হতভাগ্য। কিন্তু সতীদাহের বেলায় একথা কোনদিন কেউ বলেনি বরং ওটা দর্শনীয় বলেই দেখতে ছুটতো লোকে। শুরুচি অনুসারে একই জিনিষ সুন্দর বা অসুন্দর আস্বাদ দেয়। চীনে বাড়ীতে গিয়ে দেখলেম এক সুন্দর কাচের বাটিতে ছেলেরা শুটকি মাছ খাচ্ছে ; বাটিটা মুন্দর লাগলো, আহার্যের O. P. 14–28