পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতি ও শিল্প SSలి প্ৰাণের সন্ধানে। নিজের রুচি অনুসারে দেখার সঙ্গে রসিকের দেখার পার্থক্য এই যে রসিক তিনি গণ্ডির হিসেব জেনে গণ্ডি পেরিয়ে জিনিষটিকে প্রাণ দিয়ে ধরার সাধনায় সিদ্ধি লাভ করেন, আর যে নিজের রুচি অনুসারে এটা ওটা দেখে সে গণ্ডির হিসেব একেবারেই অগ্রাহ করে, যেটা তার ভালো সেইটেই, সবার ভালো ঠাউরে নেয়। নিছক নিজত্ব নিয়ে আছে, কোনো জাতির সঙ্গে কোনো কালান্তগত প্রথার সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন শিল্প বিশ্বের কোথাও নেই, সুতরাং একেবারে আপ রুচি নিয়ে রসের জগতে রচনার জগতে বিচরণ করতে গেলে এমন হ’তে পারে যে, হয়তে হাতে মণি উঠলে কিন্তু ফেলে দিলেম সেটা ঢেল৷ বলে’, কিম্বা শবরীর হাতের গজমুক্তার মতো নিজের কাছে রাখলেম দিবির খেলার জিনিষ বলে’, মমটিা অজ্ঞাত রইলো । নিজের রুচি খাবার জিনিষের বেলায় চলে, পেট আপনার সেখানে আপ রুচি খানা,কিন্তু হৃদয় নিয়ে যেখানে কথা সেখানে আপ রুচি চালাতে গেলে চলে না । হৃদয়কে কেবল আপনার করে’ রাখলে নিজেই ঠকি, হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয় মেলানোতেই রস পাই, সুতরাং বলতে পারি যে, রস হ’ল দুইকে মিলিয়ে সেতু, রুচি হ’ল দুইকে পৃথক করে প্রাচীর । মানুষের অন্তর অন্তের সঙ্গে মিলতে চায়, ভাব করতে চলে, কিন্তু ভাবের লোকটি সহজে তো খুজে পায় না, ফলেই সেখানে একের রুচি অন্যের রুচিতে ভিন্নতা নিয়ে দুটি মানুষ পৃথক। এই ভাবে মানুষ এককালে দলে দলে পাশাপাশি থেকেও ছিল রুচি দিয়ে পৃথক, ক্রমে মানুষ নিজের বড় সমাজ বড় ধর্ম এমনি সব বাধন নিজে স্বষ্টি করে দলে ভারি হয়ে একটি কৃত্রিম ঐক্য পেয়ে বিভিন্ন সমাজ ও বিভিন্ন জাতি হ’য়ে উঠলো, এবং সেই জাতির কুলানুগত আচার ব্যবহার শিক্ষা দীক্ষার ধারা ধরে চলতে চলতে অস্তরের ভাবনা-চিন্তাতেও দেখতে এক হ’য়ে উঠলো দুটি ভিন্ন রুচির মানুষ—এ যেন বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেতে থাকলো । এই কৃত্রিম ভাবের মিলুন থেকে উৎপত্তি হ’ল জাতীয় শিল্প যাকে বলা যায় তা— সেখানে গড়ে তোলার ধরণ ধারণ শিল্পী বিশেষের উপরে ছাড়া রইলো না, শিল্পশাস্ত্রের কুল-পঞ্জিকার মধ্যে শক্ত করে বাধা রইলো সব । আমাদের এক শ্রেণীর মূর্তি-শিল্প অনেকটা এই শক্ত করে বাধা পাথর ; তারপর সঙ্গীত অভিনয় ইত্যাদি, সেখানে দেশ কাল পাত্র ভেদে