পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২২৬
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

খুল্লো। চাদামামার ছড়া আউড়ে বার হ’ল জাত পথে পথে এক তালে, এক সুরে, এক প্রাণে, একটা হারমোনিয়াম বাজিয়ে খুসি করে চাদ তুলতে। জাতীয় নাট্যমন্দিরে, কলাভবনে বা ইণ্ডিয়ান মিউজিয়ামে ৪ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা, তাতে করে আজকের ভারতবাসীর সঙ্গে কালকের ভারতবাসীর কলাবিদ্যার বাইরে বাইরে কতকটা পরিচয় হ’ল, যেন সেকালের রূপকথা শোনার কায হ’ল, মনের কল্পনা উত্তেজিত হ’ল খানিক, কিন্তু এতে করে আজকের আমরা আমাদের শিল্পকে নিজের করে যথার্থভাবে পেলেম না । যে রসবোধ তখনকার তাদের নানা সুন্দর স্মৃষ্টির বিষয়ে নিযুক্ত করেছিল তাকে আবার ঘরে আনতে হ’লে এ ভাবের জাতীয় আয়োজনে চলবে না। জাতি যে উপায়ে শিল্পকে জীবন-প্রদীপের আলোয় বরণ করে ঘরে আনতে পারে নতুন বধুরূপে তারি আয়োজন করা চাই, নতুন করে’ উৎসব লাগুক ঘরের মানুষটির প্রাণে কলাবোঁটির সঙ্গে, ঘরে বাইরে লক্ষ্মী বিরাজ করবেন তখন এসে, শ্ৰী ফিরে যাবে জাতির । à আমাদের জাতির বাস্তুভিটে সেখানে পুরাকালের ঘরে ঘরে স্মৃষ্টির তৈজসপত্র জমা করে যেমন বুড়ো কত গিন্নিরা চলে গেলেন, সব দেশে সবার ভিটেয় তেমনি ঘটনাই ঘটে। কিন্তু আমার দেশে আর এক আশ্চর্য কাণ্ড ঘটলো ; সেই বুড়োবুড়ী ছেলে-বেী হয়ে নাতি নাতবে হয়ে বারে বারে ফিরে ফিরে পুরোনো বাসায় ঠিক অতীত কালের জীবন যাত্রা নির্বাহ করতে এলো । সাজে তেমনি, কাজে তেমনি,—সেই নাচ গান সেই ছবি সেই ঝাড়-লণ্ঠন, শুধু কালটা এই। একে বলতে পারি অতীত-বত মানে ভয়ঙ্কর রকম একটা রাক্ষস-বিবাহ, এতে করে অতীত বঁচিলো বত মানকে মেরে—এই স্মৃষ্টিছাড়া বিবাহের ফল শুভ হ’ল না শিল্পসৃষ্টির পক্ষে । কালচক্র ঘুরতে ঘুরতে জাতীয় জীবনযাত্রার রথখানি পৌঁছে দিলে যদি আজকের আমাদের সেই নৈমিষারণ্যে, তবে সে জীবন নিয়ে সত্য ত্রেত। দ্বাপরের যা কিছু তার পুনরাবৃত্তি করা ছাড়া আমাদের তো আর কোন কায রইলো না । জাতি বতে থাকে যেখানে সেকালের সঞ্চয়ের উপরে, সেখানে হয়তো তার জাত থাকে, কিন্তু শিল্প প্রভূতি নানা রচনা ও স্বষ্টির দিক দিয়ে তার