পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৫৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

খুব প্রাচীনকালে মানুষ যখন গুহাবাস করছে, তখন তারা কি দেখছে এবং কেমন ভাবে দেখছে তার ছবি এখনো গুহার দেওয়ালে এবং ছাদে লেখা রয়েছে। এই ছবিগুলির মধ্যে এক প্রস্থ ছবি দেখি যেগুলি শুধু চোখে দেখা রূপের মমুনা—হরিণ বসে আছে, গরু চরছে, মানুষ লড়ছে, সবগুলোই কিন্তু চক্ষুহীন ; একটাতেও চোখ দেয়নি চিত্রকর, শুধু রূপ—দেণ্ডয়ালের গায়ে ছায় পড়লে যা দেখায় তাই । (—Childhood of Art, Spearing, page 114, Fig. 74) oth of 2* of চোখের সঙ্গে মন জুড়ে দেখার নমুনা—হরিণ চেয়ে আছে সামনের বনের দিকে, হরিণ হরিণীর সঙ্গে যাচ্ছে আর ফিরে ফিরে দেখছে,—এই দুই ছবিতে চোখ একেছে যত্নে মানুষ, শুধু হরিণের ছায়াচিত্র নয় তার রূপ এবং ভাব এক হ’য়ে পুরো ছবি হয়েছে তখন। (—Childhood of Art, Spearing, Figs. 70 and 65, pages 104-108) i অনেকে দেখি শুনতে বেশ পায় অথচ সুর বিষয়ে একেবারে বধির ; তেমনি রূপ দেখছে অথচ রূপ দেখছে না এমন লোক বিস্তর। প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ দুয়ের সমস্যা শাস্ত্রকার যে ভাবে মীমাংসা করেছেন তার জটিলতার মধ্যে যাবার সাধ্য নেই। শিল্পের দিক দিয়ে এর একটা মীমাংসা উপস্থিত হবার চেষ্ট৷ হয়েছিল আমরা দেখতে পাই, সেট থেকে ব্যাপারটা হয়তো আমরা সহজে বুঝবো । চীন দেশে "তাওইষ্ট সাধক—শিল্পের দিক দিয়ে অপ্রত্যক্ষ সাধনার অনেকগুলি উপায় এদের ছবি থেকে পাই । তাদের প্রধান কথা হ’ল এই যে, পটের ধৌত অংশ (সাদা জমী) এবং লাঞ্ছিত ও রঞ্জিত অংশের যথাযথ হিসেবের উপরে ছবির ভাবের বিস্তৃতি নির্ভর করছে ; তারা বলেন যে, ঘর সাজানোর বেলায় নানারূপ জিনিষ দিয়ে ঘর ভর্তি করা মানে ঘরের প্রসার ও সঙ্গে সঙ্গে মনের এবং দৃষ্টির প্রসার নষ্ট করা। এই হ’ল তাদের মত এবং এইভাবে অপ্রত্যক্ষের স্বাদ শিল্পকাযে পৌছে দেবার উপদেশ তারা দেন। অামাদের দেশের শিল্পসাধক এর উল্টে দিক দিয়ে রূপের বিস্তারের পথ নিদেশ করলেন—“দাক্ষিণাত্যের মন্দির ধারণাতীত সংখ্যাতীত রূপে ভরে উঠে একটা বিরাট বিপুলত এবং অনির্দিষ্টতায় গিয়ে মিল্লেী, লক্ষ্য হারালে গিয়ে চুলক্ষ্যতার মধ্যে, রূপ থেকেও রইলো