পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরূপ না রূপ २¢¢ ন৷ ” চীনের ছবিতে ছবিতে যেটি সাদা অংশ সেটি রূপ না থেকেও রূপে ভর্তি হল, আমাদের মন্দিরের চুড়া সেটি রূপ থেকে ও রূপ না থাকা দিয়ে পরিপূর্ণ হল। জয়পুরি আঁকা ছবি সেখানে কড়া রঙের তলায় কড়া রেখা তলিয়ে দিয়ে শিল্পী অপ্রত্যক্ষের সমস্ত মিটিয়েছে। মোগল আমলের আঁকা ছবি কোমল থেকে অতিকোমল রেখাকে প্রায় ছর্নিরীক্ষ্যতার কাছাকাছি টেনে নিয়ে তার উপরে রঙ্গীন ওড়নার আড়াল টেনে এই সমস্যা মিটিয়েছে । আফ্রিকার শিল্প সেখানে রেখার রঙের সরল টান অদ্ভুত কৌশলে কাটা, সমস্ত রূপের দ্বনির্দিষ্টতা অরূপের দিকেও যায় না, সেখানে শুধু রূপ আর রূপ, কিন্তু সেখানেও চোখের দেখাকে অতিক্রম করছেন শিল্পী ভীমকান্ত কল্পনার পথ ধরে’ । পাহাড়ের ঘরে বসে থাকতেম, সামনের খোলা জানালায় ছুটি পাহাড় একখানি আকাশপটে ধরা ছবির মতে ধরা থাকতো, কিন্তু সেইটুকু পলে পলে নতুন রূপ নতুন ভাবে ভরে উঠতে দেখতেম। পাহাড় পথে চলতেম, দেখতেম—এক স্থানে পথ শেষ হয়েছে অপার রূপের কুলে, এক স্থানে থেমেছে মন-ভোলানো কুয়াসায় ঢাকা শূন্যের পাশে, এক স্থানে বা পথ আপনাকে হারিয়েছে গভীর অরণ্যে আলো-ছায়ায় নিবিড় রহস্তের অন্তরালে । ঝরণা রূপ ধরে কোথাও এসে পড়তে কাছে, ঝরণা রূপ হারিয়ে কোথাও শোনাতে সুরটুকু—এই ভাবে গেছে দিনরাত হৃদয় এবং দৃষ্টি দুজনে মিলে একদিনও এ কথা ভাবতে পারেনি যে রূপ নেই, রহস্য নেই, অরূপ আছে ; দিনরাতের মধ্যে রূপ ও রহস্য এর। হরগৌরী যুগলমূতির মতো বিরাজ কচ্ছে—এই কথাই বলেছে বার বার। আনন্দে পূর্ণ পাত্র পেয়ে চোখ এবং মন কবির ভাষায় বলেছে, ছবির ভাষায় বলেছে— “আমার নয়ন ভুলানো এলে ! আমি কি হেরিলাম হৃদয় মেলে । শিউলি তলার পাশে পাশে, ঝরা ফুলের রাশে রাশে, শিশির ভেজা ঘাসে ঘাসে