রূপবিষ্ঠা ૨ઉ જે .ার লীলার সহচরী বলেই গ্রহণ করেছে এবং এখনো এইভাবেই একে দখছে। “গৃহিণী সচিবঃ সখীমিথঃ” একথা রূপসীর বেলায় যেমন, তেমনি রূপবিদ্যার বেলাতেও বলা চলে । রূপবিদ্যাকে যারা সখের দিক দিয়ে দেখতে চলে তার নেশা ছুটলে অন্ত কিছুতে লেগে যায়, কিন্তু রূপবিদ্য। যার কাছে সত্য হ’য়ে উঠলো, সেই বল্পে এ খেলা নয়, এ লীলা— “এ তো খেলা নয় এ যে হৃদয়-দহন জাল৷ ” w... —রবীন্দ্রনাথ অন্তহীন রসের জন্য অফুরন্ত রূপের জন্য জাল। আর তৃষ্ণার শেষ নেই মানুষের, সমস্ত রূপ-রচনা এfর সাক্ষা দিয়ে চল্লো। রূপের জাল। রসের জ্বালা বহ্নির সমান জ্বলেছে সব উৎকৃষ্ট রচনার মধ্যে, রূপদক্ষের জীবন লীলাময় জ্বালাময় হয়ে উঠছে, প্রদীপ্ত সমস্ত রূপ ও রসের তপস্যায় মানুষ জীবনপাত করছে রূপবিদ্যার সাহায্যে এই জালাকে এই তৃষ্ণাকে রূপের পাত্রে ধরতে ; মানুষের এই তপশ্চরণ তাকে সখের ব্যাপার বলে’ যারা ভাবে তারা রূপবিদ্যাকে কি ছোট করেই না দেখে ! বৈকুৰ্যমণি নিজের অস্তরের জালা নিয়ে বাইরের বিরাট আলোক-রূপকে স্পর্শ করে’ দীপ্তি দিয়ে চল্লেী, মানুষের প্রতিভা তেমনি গিয়ে মিল্লো বিশ্বের দিকে দিকে ধরা ভাস্বর সমস্ত রূপের ও রসের সঙ্গে,—এই ঘটনা নিয়ে রূপবিদ্যার সূত্রপাত ; প্রতিভাবানের লীলা তারি সাক্ষী রূপ রচনা সমস্ত, রূপ নিয়ে ছেলেখেলা নয়, প্রাণের জ্বালা নিয়ে রূপের জালাকে গিয়ে স্পর্শ করা, —রূপের সঙ্গে চোখ-ফোটাফুটি খেলা একেবারেই নয় । খেলার নেশা ছুটলে খেলা থেমে যায়–কিন্তু লীলার অবসান নেই ; লীলা করে চলায় অবসাদ নেই, আজীবন রূপদক্ষ মানুষের কাছে লীলাময়ী মায়াময়ী বিশ্বরূপিণী । তিনি আসছেন যাচ্ছেন অনন্ত লীলা দেখিয়ে, তারি ছন্দ ধরছে মানুষ রূপবিদ্যা দিয়ে নিজের রচনায়, সে নিজের ও বিশ্বের লীলার পরিচয় ধরছে যুগ যুগ ধরে । প্রতিভার প্রদীপ জালিয়ে আরতি হচ্ছে অফুরন্ত রূপরসের দেবতার। মানুষ জগতের প্রাণী মাত্রের সঙ্গে সমান ভাবে প্রাণবন্ত অথচ শক্তি নিয়ে প্রতিভা নিয়ে সবার বড় হ’ল সে। রূপ-রচনা ধরে মানুষের প্রতিভা প্রকাশ করলে আপনাকে ।
পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।