পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপবিদ্যা S\9) মানুষের প্রতিভাকে কম্পাসের কাটার মতে টানছে তো টানছেই । মানুষের প্রতিভাকে রূপ-কর্মের পথে আকর্ষণ করে চলেছে যে সব রূপ তাদের বিরাট শক্তিতে বাধা দেয় এমন দৈত্যের দল সৃষ্টি হয়নি হবে না সুকানো কালে । প্রতিভা মানুষের চিরকালই আছে, রূপ-কর্ম সমস্ত ধরে চিরকাল থাকবেও ; তর্ক করে তাকে ঠেকানো যায়নি যাবেও না। প্রতিভাবানের উপর নির্যাতন যারা করলে পুরাকালে তারা বিলুপ্তির তলায় চলে গেল, কিন্তু নির্যাতিতের প্রতিভা দিয়ে রচিত অতৈলপুর-প্রদীপ রূপলোকে একটা একটা ধ্রুবতারার মতো জলে রইলো যুগ যুগ ধরে আলো দিয়ে সৌন্দর্য দিয়ে । মানুষ নিজেকে নিজে আবিষ্কার করতে পারে না, নিজেকে অপরের নিকটে প্রকাশ করতে পারে না, চোখে দেখ রূপ, কানে শোনা রূপ, মনে ভাব রূপ সমস্তই—তার কাছে অর্থহীন যার কাছে রূপবিষ্ঠ। নেই। প্রতিভাবানের রচনা সমস্ত অর্থহীন বলে যারা উড়িয়ে দিতে চলে, জগতে কোন কিছুর অর্থ কোনো কালে তাদের কাছে আবিষ্কৃত হবে এ তে বিশ্বাস করা যায় না । বিশ্বজোড়া এই যে সমস্ত রূপ, প্রতিভার আলোয় এদের স্বরূপ যুগে যুগে আবিষ্কৃত হতে থাকে,তবেই তো মানুষ বিশ্বের দেবতাকে দেখলে স্বাজ্জল্যমান এই স্বষ্টির ভিতরে । জীবনের অর্থই অনাবিষ্কৃত থাকতে যদি না রূপদক্ষ মানুষের প্রতিভা জীবস্তুরূপ সমস্তকে স্পর্শ করতে। অনাবিষ্কৃত যা তা প্রতিভার আলোকে আবিষ্কৃত হ’ল—নিউটনের আবিষ্কার যেমন । তেমনি রূপের জগতে প্রতিভাবান এল এবং ধরে গেল নানা সত্য । প্রতিভা রূপের জগতে যে সমস্ত অঘটন ব্যাপার ঘটিয়েছে তার মধ্যে কত দৃষ্টান্ত দেবো ? একটা ঘটনা যা ঘটেছে রূপ-জগতে তার কথা বলি। রূপের জগতে বসে মানুষ পাখী অঁাকে—যুগের পর যুগ যায় —কল্পনার পাখী, গাছের পাখী, ডালের পার্থী রঙে রেখায় ধরে রূপ বিষয়ে ধীমান মানুষ । বসা পাখী হয়, ভাসা পার্থী হয়, ঘুমন্ত পাখী হয়, চলন্ত পাখী হয় না, দূর আকাশের উড়ন্ত পার্থী হয় না। ধীমানের হাতের রেখা হার মানে রঙ হার মানে যুগে যুগে এই পার্থীকে ছবিতে ধরতে। ডান মেলানো পার্থী হয়, কিন্তু নীল পটে সে স্থির নিশ্চল—যেন লাগিয়ে