পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপবিদ্যা
২৬৫

এমনি কত শত দিক দিয়ে কত প্রতিভা রূপ দিয়ে চিহ্নিত করল এক একটা যুগ-পরিবতন, তার বিচিত্র ইতিহাস রূপবিদ্যার দ্বার অধিকার করা ছাড়া তো উপায় নাই ! আমরা দেখতে পাই স্পেন দেশের গুহাবাসী যে কালে মামুষের সম্মুখ দৃশ্যই একে চলেছে, ঠিক সেই কালেই অষ্ট্রেলিয়ার জঙ্গলবাসী ( ব্যুস্ম্যেন ) তারা আঁকছে তাদের প্রত্যেক মানুষ একেবারে পাশ থেকে, এবং এই যুগের পর কত যুগ কত সভ্যতা এল গেল তার ঠিক ঠিকানা নেই, তারপর মানুষ না-পাশে না-সামনে এই ভাবে আধফেরা অবস্থায় হাকতে শিখে নিলে কোন এক দেশের প্রতিভাবানের কাছ থেকে । অজন্তার ভিত্তি-চিত্রণের মধ্যে এই ভাবের আধফের মূতি সমস্ত পাই । সেখান থেকে আরম্ভ করে কত যুগ ধরে চলতে চলতে কোন দেশে কোন কালে দেখি একজন প্রতিভাবান এষ্ট ভাবে আঁকার সূত্রপাত করলেন । সুলেমান বাদশার একটা কবচ ছিল সেটা ধারণ করলে পুথিবীর গোপন রহস্য সমস্তই অবগত হ’তে পারতেন তিনি । এইরূপ বিদ্যা সেই কাৰ্যই করে মানুষের সমস্ত গোপন রহস্য ধরে দিতে আজকের দিনের আমাদের সামনে । ইউরোপ অক্লান্ত ভাবে এই রূপবিদ্যার চর্চা করে চল্লো তাদের সামনে দিনের পর দিন, রূপের সমস্ত রহস্য ধরা পড়তে থাকলে, আমরা রূপবিদ্যাকে চাই না, কাজেই পাই ও না এসব খবর, যতক্ষণ না ওদের কাছ থেকে খবরটা কাগজে ছাপা হ’য়ে আসে । আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে পাইনি এমন কিছু নেই বল্লেও চলে—কাব্য সাহিত্য সঙ্গীত নাট্য নৃত্য বাদ্য চিত্র মূর্তি সবই। এত বড় ঐশ্বর্য কোনো দেশের মানুষ তার সন্তানদের জন্যে রেখে গেল না । কিন্তু আমরা জানিনে যে এই সম্পদ এর কতখানি আমাদের প্রতিভাবানদের স্বোপার্জিত, কতখানি বা দেশ-দেশান্তর থেকে জয় করে’ ংগ্রহ করে” ধার করে এমন কি চেয়ে আনা তাও । একটা ছোটখাটো দৃষ্টান্ত দিই। সঙ্গীত নিয়ে আজকাল খুবই চর্চা চলেছে, কিন্তু খুব ভাল ওস্তাদ তাকে বল, ইমন কল্যাণের সঠিক বিবরণ দাও, বড় জোর শুনবে, একটা যাবনিক ও একটা হিন্দু ঘটে স্বরে মিলে একটা হয়েছে ব্যাপার, কিন্তু এও শুনবে হয়তে। • P. 14-34