পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৬৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

হংস-দূতের ভ্রমর-দূতের কবিদের মধ্যে কিছু যে পাইনে তা নয়, শুধু একট যুগ-পরিবতনের মধ্যে বৈষ্ণব কবির কাব্যকলা আর ইতর কবিদের কাব্যকলার স্থান কি ভাবে ধরা সেইটেই দেখানে উদেশ্ব আমার । প্রতিভাশালী কবির রামায়ণ যে দেশকালের অতীত, আর মে কবি ত নয় তার রামায়ণী গান শুধু যে এক দেশের বা এক দলের,—এট কালই প্রমাণ করে দিচ্ছে—তান্ত প্রমাণের অপেক্ষা নেই এখানে ধীশক্তিমানদের অগ্রণী বলে ধরতে পারি চাণক্য পণ্ডিতকে ; তার একট শ্লোক আর প্রতিভাবান কবি কালিদাস র্তার একটা শ্লোক—দুয়ের ইতর-বিশেষ আছে এবং ঠিক সেই রকমের ইতর-বিশেষ আছে আজকের যথার্থ কবির গানে এবং অসত্য কবির গানে—এ নিয়ে ঝগড়া তে। নেই কারু সঙ্গে । আমাদের প্রাচীন আমলের একখানা স্থান-চিত্র—স্থান-চিত্রের গভীর রহস্য সবট। তার মধ্যে যে নেই সেটা আজকের ইউরোপের ব। চীনের বা জাপানের অপূর্ব একটি স্থান-চিত্রের পাশে ধরলেই বোঝ যায়। স্থান-চিত্র আঁকার প্রতিভা কখন কোন দেশে প্রথম জাগলো, তার ইতিহাস জেনে আনন্দই পাই, এ দুঃখ তো মনে আসে না যে আমাদের দেশে স্থান-চিত্র সম্পূর্ণ বিকাশ পেলে না ! রূপবিদ্যা আমাদের যে রাস্তা ধরে চালায় সেটা এত বড় রাস্তা যে সেখানে একটা জগৎব্যাপী রূপের প্রকাশ-বেদনার সামনে গিয়ে আমরা পৌছই—ভুলে যেতে হয় এ-দেশ ও-দেশ এ-জগৎ ও-জগৎ এ-মানুষ সে-মানুষ এ-কাল সে-কাল । মানুষের রূপ-স্মৃষ্টি যেখানে বৃহত্তর ভাবে চোখে আসে, দেখি যে মানুষের প্রতিভার আলো বিকীর্ণ হয়েছে সেখানে বৃহত্তম রূপের রহস্য প্রকাশ করে দিয়ে। প্রত্নতত্ত্ব-বিদ্যা তা দিয়ে একটা জিনিষের স্থান কাল সবই ঠিক হ’ল কিন্তু তখনও সেটিকে জানতে অনেকখানি বাকী থাকলো । একটা সহজ দৃষ্টান্ত দিই। তাজমহলটা কখন হ’ল, কারা গড়লে, কি ধাচে গড়লে, গড়তে কত টাকা পড়লো, কত মানুষ খাটলে, তারা কে কত তঙ্ক মাইনে পেলে, কোন কোন দেশ থেকে তার পাথর এল, কার ভাণ্ডার থেকে তাকে সাজাবার মণিমুক্ত এল—এ সবই জ্ঞান হ’ল পুরাতত্ত্ব ইতিহাস দিয়ে, কিন্তু তবু অনেক খানি জানার বাকী