পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপবিদ্যা
২৭১

রূপের রাজত্বে প্রবেশ রূপের রহস্তে অনুপ্রবেশ এ সব রূপবিষ্ঠা নিয়ে চর্চা না করলে হবার জো নেই। ছাত্র যখন প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় তখন সমস্ত বিদ্যার সঙ্গে পরিচয় করে নেবার অধিকার পেলে সে, বিদ্যার ছাড় মুক্ত হ’ল তার সামনে । তেমনি এই রূপবিদ্যার প্রবেশিক পরীক্ষা পাস হ’ল শিল্পী তবে তার রূপের তথ্য রূপের তত্ত্ব জানার জন্তে যে সব বিদ্যা রয়েছে যে সব শাস্ত্র রয়েছে তাদের নিয়ে নাড় চাড় করার ক্ষমতা পেয়ে গেল সে, রূপ-রাজত্বের রহস্য-নিকেতন মুক্ত হ’ল তার কাছে। একট, বিদ্যা দিয়ে আমরা ফুলের রহস্য অবগত হচ্ছি, কোন বিদ্যা আমাদের পশুপক্ষীর বিষয়ে জানাচ্ছে, কোনটা মানব চরিত্র, কোন বিদ্যা বা শিশু-চরিত্র স্পষ্ট করে’ ধরছে আমাদের কাছে, রূপের তত্ত্ব তেমনি রূপবিদ্যা জানাচ্ছে—মানুষকে রূপটির রচনার দোষগুণ তার সমস্ত ইতিহাস কলাকৌশল সবই জানাচ্ছে । to আমরা যখন নিজেদের কিছুর চর্চা করতে চলি তখন অনেক সময়ে মা যে চোখে তার ছেলেকে দেখে সেই চোখেই দেখে চলি, এতে করে দোষ চোখে পড়ে না, দোষগুলোও গুণ হ’য়ে দেখা দিয়ে চর্চার বিষয়টি সম্বন্ধে একটা ভুল ধারণা পৌছে দেয় মনে, কিন্তু রূপদক্ষের চোখে রূপের সামান্য খুৎটিও এড়ায় না । যেমন গুণটি তেমনি, রূপটি ঠিক যা তা যথাযথ ভাবেই উপস্থিত হয় তাদের কাছে । ধর, এই অজস্তার চিত্রাবলী কি অদ্ভুত কি অদ্ভুত এই কথাই শুনে আসছি, ওর রঙ যেমন রেখা তেমন—সবই তখনকার সমস্ত রূপকল্পনার মধ্যে শ্রেষ্ঠ, এ তো শুনে এলেম এবং মেনেও নিলেম ভাই, কিন্তু অজন্তু চিত্রের একটা দিক আছে সেট। তখনকার শিল্পীর চিত্রকরণে অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে সুস্পষ্ট রকমে । এটা শুধু চোখে যারা দেখলে কিংবা ইতিহাস পুরাতত্ত্ব প্রভৃতি বিদ্যা দিয়ে আলাদা আলাদা দেখে গেল ছবিগুলো, তাদের চোখ এড়িয়ে গেল, অথচ সেই অক্ষমতা শুধু অজস্তায় নয় অজস্তার আগে অজস্তার পরে পৃথিবীর সব চিত্রকরদের মধ্যে ধরা যাচ্ছে । অনেক কাল মানুষ ছবিতে পাহাড় অঁাকতে পারেনি, একটা স্থানচিত্র আঁকিতে পারেনি, নদী আঁকিতে পারেনি, আকাশ আঁকতে পারেনি, মেঘ আঁকতে পারেনি, বাতাস ঝড় উত্তাল তরঙ্গ সমুদ্র কত কি আঁকতে