পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপ দেখা
২৭৫

কপদক্ষত না পেলে এই রেখা আঁকাই অসম্ভব হ’য়ে ওঠে। অলঙ্কারের মধ্যে বৃষ্টিধারী ধরে নেওয়া চলে, মুক্তার ঝুরি থেকে আরম্ভ করে সোনার তার দিয়ে বর্ষার একটা প্রতীক ধরে নেওয়া যায় রেশমের পদায় কিংবা আর কিছুতে, কিন্তু এই অলঙ্কার-শিল্পের উপরের জিনিষ হ’ল রূপদক্ষের হাতের টান। এ কথা তে মিছে নয় যে ভিজে মাটির স্ববাসে ভরপুর জল করার শব্দে মুখর রেখার টান কথার টান স্বরের টান রূপদক্ষের কাছ থেকেই আমরা পেয়েছি। যে রূপদক্ষ ওধারে বসে কায করছেন আর যে রূপদক্ষ আমাদের মাঝে বসেই কায করছেন—দুজনেই রূপ-রেখার অধিকারী । 戲 প্রকৃতির লীলা যা চলেছে আমাদের চোখের সামনে তা নিরীক্ষণ করে দেখলে দেখি তার মধ্যে কারিগর এবং রূপদক্ষের হাত একই সঙ্গে কায করছে। কারিগর বাধলে নানা রেখা দিয়ে গাছের কাঠামো, পাতার শিরা উপশিরা, জীবের অস্থিপঞ্জর এমনি কত কি একেবারে শক্ত করে’ বাধা রেখা দিয়ে, আর রূপদক্ষ লীন করে দিলেন এই বাধা রেখার কসন এবং কর্কশতা, রূপরেখার আবরণ অবগুণ্ঠন পড়লে সবটার উপরে। নরকঙ্কালের বাধা রেখা দিয়ে বাধা চক্ষু-কেটির তাকে ঢেকে রূপ-রেখা টেনে দিলে দুটি কালে চোখের হাসি-কান্নার স্বরের টান, শক্ত রেখা দিয়ে টানা বঁাশপাত তার উপরে রঙ আর আলো টানটোনের ঘোমটা ফেল্পে। একই সঙ্গে কারিগরি এবং রূপ-কম এ মানুষের কাযেও দেখা দিয়েছে অনেক স্থলে ; যে রেখায় বাধা গেল সেই রেখা দিয়েই ছাড়া পেলে রূপ –এই অভাবনীয় দক্ষত যে লাভ করেছে মানুষ, এর পরিচয় ধরেছে তারা পাথরে ছবিতে কবিতায় গানে। দেশভেদে কোনো এক জাতি যে এই রূপ-রেখা প্রথম পেয়ে গেল তা নয়—যেমন ছোট ছেলেদের মধ্যে দেখা যায় যে বড় হ’য়ে একটা কেউ হ’য়ে না উঠেও রূপকথা বলছে, বেশ গাইছে বেশ নাচছে, তেমনি সব দেশের মানুষের শিল্পচর্চা করে” দেখি দেশে দেশে খুব আদি কালেরও মানুষ রূপ-রেখা বিষয়ে সম্পূর্ণ পাকা হ'য়ে গেছে। ইতিহাসে অখ্যাত যুগের মানুষ তাদের বাল্যে বিশ্বদেবতার রূপ-রেখা বিষয়ে কত উপদেশ দিলেন–রূপ-রেখা দিয়ে কেমন করে’ গড়তে হয়, লিখতে হয়, সুর বাধতে হয় তার সব শিক্ষা ধরে দিলেন জলে স্থলে আকাশে। আজও সে শিক্ষার