পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপ দেখা
২৮১

রূপ এবং রেখা দুয়ের যথার্থ মিলন সপ্রমাণ করে রূপবতী রেখা, সেখানে রূপকেও পাই রেখাকেও পাই রসকেও পাই একসঙ্গে মিলিয়ে । দপ্তরীর টানা খাতার রেখায় খালি রেখাকে পাচ্ছি ; এই সোজা সোজ পাহারার মধ্যে একটা রেখা একটু যদি বেঁকে দাড়ায় কিংবা নেচে চলে তখনি খাতার পাতা শুধু আর রেখার সমষ্টি থাকে না, সোজা রেখা বাকা রেখায় মিলে একটা সম্বন্ধ স্থাপন করে' নক্স হ’য়ে উঠতে চলে। যেমন এই রেখায় রেখায় সম্বন্ধ তেমনি রূপ আর রেখার সম্বন্ধ নিয়ে তবে ছবিতে ফোটে ভাব রস ইত্যাদি । দপ্তরীর রেখ। সে যা তাই পলে, পড়ে থাকে সোজ, লেখার বেলাতেও তেমনি খাড়া শব্দ । কাক পুল্লে, আমি কাকই আর কিছুই নয়, কিন্তু যখন বল্লেম কাক-চক্ষু জল তখন কথারূপী কাক এবং জল এবং চক্ষু এর স্বকীয়ত। ছেড়ে তিন সখীর মতে। গলাগলি মিল্লো পুকুর পড়ে। সা রি গা মা এর প্রত্যেকে সম্বন্ধ স্থাপন করতে চল্লো প্রত্যেকের সঙ্গে স্বাতন্ত্র্য বর্জন করে’ অনেকখানি, তবেই হ’ল গান । এমনি রূপে রেখায়, কথায় কথায়, স্বরে ও স্বরে, সুরে এবং কথায়, এমন কি বলতে পারি সুরে বেলুরেও একত্র মিলে তাবৎ রস-রচনার সহায়তা করছে। বাধন এবং মুক্তি এরি ছন্দ নিয়ে রেখা হ’ল রূপবতী ছবির বেলাতে, কথার বেলাতেও এই কথা, গানের বেলাতেও ঐ কথা । এক অন্ত্যেতে লীন এই লয়ে বাজছে রূপজগৎটাই একখানি বীণার মতে, যেখানে এই লয় ভঙ্গ হ’ল সেইখানেই ব্যাপারটি নীরস হল । যেমন কথা সুর এবং লয় তেমনি রঙ রেখা ও রূপ তিনে মিলে এক হ’তে চায়, রূপদক্ষ সে এদের এক করবার উপায় জানে, কিন্তু যে মোটেই দক্ষ নয় সে এদের আলাদা আলাদা রাখে, নয়ন্তে। এদের কষ্টে স্বষ্টে এমনভাবে মেলায় যাতে করে এদের আপনার আপনার শ্ৰী ছাদ পর্যস্ত নষ্ট হ’য়ে একট। বিস্ত্ৰী জিনিষের সমষ্টি গড়ে’ ওঠে । এই যে রূপ-রেখা যা পরিখার মতে রূপকে আপনার মধ্যে বন্দী করে না একে কারিগর নয় রূপদক্ষেরাই খুজে বার করেছে। খুব প্রাচীনকালের মানুষ তারা দেখি একদল রেখাকে দিয়ে রূপকে বাধছে, হরিণের শিঙ কাঠের ফলক গায়ের কাপড় কত কি’তে রেখা টানছে তারা, কিন্তু রেখা সে থাকছে রূপের এবং রূপ সে থাকছে রেখার অটুট জালে О. Р. 14-36