পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
স্মৃতি ও শক্তি
২৯১

কল্পনাশক্তি তো নেই যে ছবি দেবে । লাবণ্যের আবরণ পড়ছে শক্ত পাহাড়ের উপরে যেমন, সেইভাবেই স্মৃতির আবরণ সোঁকুমৗর্য দিচ্ছে দেখি মানুষের রূপ-রচনায় । একেই বলেছেন শাস্ত্রকার—নিপুণতা, শক্তি গোপনের নিপুণতা, রচনাটিকে শক্ত হ’য়ে না উঠতে দেওয়ার নিপুণত । চাদের যে মণ্ডল আর লোহার কলের চাকার যে মণ্ডল—এই দুয়ের মধ্যে একটা শক্ত অন্তটা সুকুমার। সকালের সূর্য আলোর সোঁকুমার্যে ঢাকা দিলে আপনার তেজ ও শক্তির ইতিহাস ; সকালে ফোটা সূর্যমুখী ফুল তাকেও এই হিসেব দিয়ে রচেছেন বিশ্বশিল্পী কিন্তু একটা মোমের ফুলের রচনা শক্তি ধরে’ হ’ল ! কোর্টের পেয়াদ যখন সূর্যের মতো লাল গালার শিলমোহর ছেপে যায় বাড়ির দুয়োরে, সেটাকে তে রূপস্থষ্টি বলে ভুল হয় ন—সে আইনের নিছক শক্তিকেই প্রকাশ করতে থাকে রক্ত বর্ণ নিয়ে, কিন্তু একখানি সুন্দর করে’ গড়া তাম্রশাসন—সেখানে শাসন-শক্তি ঠেলে দেখা দেয় জিনিষটির সৌন্দর্য । একটা প্রাচীন মুদ্ৰা—সেখানেও এই হিসেব কাযের কথা ঢেকে দিতে সেখানে অনেকখানি কারিগরি । কিন্তু এই আজকের কালে আমাদের বাজারে চলতি যে এক টাকার নোট আধুলী সিকি হুয়ানি, এদের তে রূপস্থষ্টির হিসেবেই গড়ন দেওয়া হয়, কিন্তু রাজশক্তির শিলমোহরের ছাপ পেয়ে এর কাযের উপযুক্ত হ’ল, বাজে ঠিক, কিন্তু বাজে কায ওর মধ্যে যতটা সম্ভব কম রইলো । পুরোনে টাকা দেখতে হ’ল সুন্দর, কিন্তু কতখানি বাজে সোনা তাম। কার্যকম তার মধ্যে থাকলে তার ঠিক নেই, রাজশক্তির চেয়ে রাজ-ঐশ্বর্যের শোভা সেখানে ধরা পড়লো অনেকখানি সোনায় রূপায় । একটা বুট জুতো—যে ছয়টা ব্যাপার নিয়ে চিত্র লেখা মূর্তি গড় কবিতা লেখা গান গাওয়া হয় তার সব কয়টাই বুটের নির্মাণে লাগলো—রুপভেদ প্রমাণ ভাবলাবণ্য সাদৃশু বর্ণিকাভঙ্গ কারিগরি নৈপুণ্য সবই প্রয়োগ হ’ল ওখানে, এ সত্ত্বেও জিনিষটা মুকুমার রূপস্থষ্টির অন্তর্গত হ’ল না, শক্তির পরিচয় ধরে শক্ত একটা কাযের জিনিষ হ’ল ; আর সেদিন ঈজিপ্টের এক রাজার পায়ের দুপাটি চটিজুতোর ছবি দেখলেম, কারিগর কি সৌকুমাৰ্য দিয়েই জুতোপাটি গড়েছে—কত স্মৃতি তাতে ধরেছে, সুন্দর স্থখানি পায়ের ভূষণ—কাযের জুতো নয়—ধুলো আর