পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩১০
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

একজন আইসেন। পর্যায়গামিনী দেবতাদ্বয়ের মধ্যে একজন পদার্থসমূহ গোপন করেন, অন্ত জন (উষা) অত্যন্ত দীপ্তিমান রথ দ্বারা তাহ। প্রকাশিত করেন।......উষা দিনের প্রথম অংশের আগমনের.সময় জানেন। তিনি স্বতোদীপ্ত ও শ্বেতবর্ণ, কৃষ্ণবর্ণ হইতে র্তাহাদের উদ্ভব - ।” অথবা যেমন বলা হ’ল—“স্বস (রাত্রি ) জ্যেষ্ঠস্বসাকে (উষাকে ) উৎপত্তিস্থান ( অপর রাত্ররূপ ) প্রদান করিয়াছেন এবং উষাকে জানাইয়া স্বয়ং চলিয়৷ যাইতেছেন, উষা সূর্যকিরণ দ্বারা অন্ধকার বিদূরিত করিয়া বিদ্যুৎ রাশির ন্যায় জগৎ প্রকাশ করিতেছেন। এই সকল স্বস্বভাবাপন্ন পুরাতনী উষাগণের মধ্যে প্রথম অপরার পশ্চাৎ প্রত্যহ গমন করেন। নবীয়সী উষা পুরাতন উষাসমূহের ন্যায় মুদিন আনয়ন করতঃ আমাদিগকে বহুধনবিশিষ্ট করিয়া প্রকাশ করুন।” --ঋগ্বেদ সংহিতা ( রমেশচন্দ্র দত্ত ) অতীতের আর বর্তমানের মধ্যে একজন কালো অন্যজন সাদা, এ ওর ভগ্নী, শুধু রঙ ভিন্ন ভিন্ন,—এ একেবারে পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছে আর্য অনার্য অবস্থার কথা। সঙ্গীতশাস্ত্রের দিক দিয়ে এই মূর্তির তুলনা পাই দিনের বেহাগ আর রাতের বেহাগে, মূৰ্তিশিল্পের দিক দিয়ে এই সাদা-কালোর রূপকে রূপ পেলে হরি-হর শিব-শক্তি কৃষ্ণ-রাধ এমনি অসংখ্য জায়গায়—চিত্রকলায় আজ আমরা যাকে বলছি Light and Shade. আলো ছায়া ইত্যাদি তা এই পুরাতনী ও নবীয়সী উষার প্রকাশ—“দেবতাদ্বয়ের মধ্যে একজন পদার্থসমূহ গোপন করেন, অন্য জন ( উষা ) অত্যন্ত দীপ্তিমান রথ দ্বারা তাহা প্রকাশিত করেন ।” অজন্ত৷ গুহার ছাদের চন্দ্ৰাতপ তার মাঝখানে যে মস্ত পদ্ম আঁকা হ’ল তারি কোণে কোণে এই সাদা আর কালো দুই উষাদেবতার রূপ লিখে গেল শিল্পীরা। যুগযুগান্তরের কল্পনা এই ভাবে যুগ যুগ ধরে আর্যশিল্পের নানা কৌশলে ধরা রইলো । - মানব মনের, তার ভাষার, তার শিল্পকলার উন্মেষ কত যুগ যুগ ধরে হচ্ছিল আলো-ছায়ার নিবিড় উষার মধ্য দিয়ে তার ঠিক ঠিকানা নেই। আর্য অবস্থায় পৌঁছতে একটা আর্যেতর অবস্থা কল্পনা করে নেওয়াতে ভুল নেই, ভুল করি তখন যখন কল্পনা করি যে পথ না চলেই আর্যের পথের শেষে উপস্থিত অতৈলপুর আশ্চর্য প্রদীপ হাতে!