পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৩২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

নিয়তিকৃত নিয়মরহিত নিয়ম বা খেলনা গড়ার নিয়মও বলতে পারে। তাকে । নিয়তির নিয়ম হ’ল বিধাতার নিয়ম, আর নিয়তির নিয়ম থেকে খানিকট স্বতন্ত্র নিয়ম হ’ল আর্টের নিয়ম । কিন্তু একেবারে যে নিয়তির নিয়ম লঙ্ঘন করলে সে আর্ট রূপ রস শব্দ গন্ধ স্পর্শ নিরপেক্ষ আট —হয়তো আছে হয়তো নেই। দুই স্মৃষ্টির নিয়মকে মানিয়ে যে আর্ট তাই নিয়েই রূপদক্ষের কারবার। একটা মাটির খেলনা তাকে ছেলের সাথী হবার উপযুক্ত করে ক্ষণিকের জীবন দিয়ে ছেড়ে দিলে আর্টিষ্ট, একটা পাথরের দেবমূর্তিকে আরো বেশি পরমায়ু দিলে আর্টিষ্ট-কেননা যুগ যুগ ধরে মানুষের সঙ্গে খেলার সম্পর্ক পাওয়া চাই তার। ঠিক এই নিয়ম দেখি বিধাতারও স্বষ্টির মধ্যে কায করছে। নক্ষত্র একটা গড়লেন বিশ্বকম।—যুগ যুগ ধরে ফুলঝুরি জালিয়ে খেলে চল্লো সে, একটা খদ্যোত গড়লেন তিনি—ক্ষণিক খেলার অবসর পেলে সে বিধাতার কাছে। আর্টিষ্টও ঠিক এর জবাব দিলে, ঘরের মধ্যে তার সে ঘরের প্রদীপ তারার মতোই জল্লে—শুধু রূপটি পেলে সে ক্ষণিকের। বিধাতার গড় প্রজাপতি সে খেল্লে ক্ষণিক, আর্টিষ্টের গড় পাষাণ সুন্দরী সে যুগ যুগ ধরে খেলতে লাগলো, মামুষের ঘরে সোনার কাটায় বেঁধা প্রজাপতি শোভা ধরলে—একের পর এক যারা সুন্দরী জন্মালো তাদের খোপায় উড়ে বসলে সে বিয়ের আগে । দেবতার সভায় বাজলে মেঘের বাদল, আর্টিষ্টের সভায় বাজলে মাটির মাদল। গাছ সে ফুল সেজে ইসারায় জানালে—আমি গাছ নয়, আমি সবুজ সাড়ি পরে’ বনদেবী, আর্টিষ্টের হাতের বীণা সে সুরের সাজে সেজে বল্লে আমি কি শুধু বীণাই, আমি পরিবাদিনী সুন্দরীও বটে। এমনি নিয়ন্তীতে অণর রূপদক্ষে বাজিখেলা রূপস্থষ্টি নিয়ে। খেলার সময় যেমন তাসগুলো হাত বদল করে তেমনি এই রূপস্থষ্টির লীলা খেলতে নিয়তির . নিয়মগুলো আসা যাওয়া করে আর্টিষ্টের হাতে বার বার। এই নিয়ম সমস্ত জানার জন্তই Nature study করতে হয় আর্টিষ্টকে, না হ’লে শুধু নিজের নিয়মে চল্পে খেলা চলে না ঘুরে ফিরে অনেকক্ষণ । অক্ষর-মূর্তিতে কতক, শব্দরূপে কতক, স্পর্শরূপে কতক—এমনি ভাবে রূপ সমস্ত ধরা দিচ্ছে আমাদের চেতনায়, আবার এই তিনে মিলিয়ে