পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপ ري (قاعي একটা রূপ তাও পাচ্ছি আমরা । আকাশের তারা থেকে আরম্ভ করে’ সমুদ্রের তলায় শুক্তির মধ্যেকার মুক্ত সবই বিধাতার স্বাক্ষরিত রূপ। মিশরের মরুভূমির মাঝে পিরামিড সেখান থেকে সমূদ্রের বুকে যে লাইট-হাউস সমস্তই মানুষের স্বাক্ষরিত রূপ তারা। বিদ্যুল্লেখ একেবারে সোনার জলে টানা অক্ষর রূপ, তার অনুগামী বজ্র একেবারে শব্দ দিয়ে গড় সে। কোকিলের কুহু—শব্দরূপ মাত্রে বসন্তস্ত্রী রইলেন সেখানে, মলয় বাতাস স্পর্শরূপ পরিমল-রূপ তার। বর্ণরূপ র্যার তাদের স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের হিসেবে অক্ষর-মূর্তির কোঠায় ফেলা চল্লো । এই ভাবে শুনে দেখা যায় ছয়ে দেখা যায় চোখ বুলিয়ে দেখা যায় রূপ আর রূপের সমস্ত ইঙ্গিত ও আভাস। পুতুলওয়ালা দুয়ারে পা দিয়েছে অমনি ছেলে ছুটেছে তার দিকে রূপের টানে—সহজে গড় পুত্তলিকা তাদের আকর্ষণ কতখানি ! ছেলে কাদে পুতুল চেয়ে, ছেলে খায় না ঘুমোয় না পুতুল না পেলে, মায়ের কোল ছেড়ে পালায় শিশু—এমন আকর্ষণ রূপের । বিধাতার স্বষ্টিতে এক আগুনের এই ধরণের আকর্ষণ—পার্থীকে টানে পতঙ্গকে টানে, দলে দলে মানুষ জড়ো হয় রূপ দেখতে । পুত্তলিকার আকর্ষণের মতো এমন বিরাট আকর্ষণ সেটা কি কুড়িয়ে পায় মানুষ ? পুতুল গড়ার নিয়ম আর অগ্নিশিখার নিয়ম কিন্তু একটু স্বতন্ত্র । আগুনের আকর্ষণের শেষে ভীষণ নিরানন্দ, পুতুলের আকর্ষণের শেষে আনন্দ । যে পুতুল গড়ে সে বুড়ে, যে পুতুল খেলে সে ছেলে, রূপের ছাদে দুয়ের মিলন ; আর ঐ বিশ্বকর্ম যিনি তারা গড়েন আর যে তারাবাজি পুড়িয়ে খেলে তাদের মিলন রূপের ছন্দে । জগন্নাথের মন্দিরে একটা ঘর দেখেছি পুতুল দিয়ে ঠাসা—স্বষ্টির পশু পক্ষী জীবজন্তু গাছপালা গড়ে গড়ে’ ধরেছে সেখানে। পাল-পার্বণে এই সব পুতুলের ডাক পড়ে রাস দোল কত কি খেলার—দেবতায় মামুযে পুতুলে ৰেধে যায় রঙ্গ তারপর খেলায় শেষে রূপ সমস্ত যে যার স্থানে চলে যায়। ছেলে যতদিন ঘরে নেই ততদিন খেলনার আলমারিতে বন্দী সমস্ত পুত্তলিকা রূপ তারা বড় দুঃখেই আছে দেখি, যেমনি ছেলে এল আর রক্ষে নেই পুতুলগুলো হাফ ছেড়ে বল্লে—যাক বাচা গেল,এইবার খেলে’ যাবার অবসর এল। এমনি রূপ সমস্ত দিকে দিকে জলে স্থলে