পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৪৬
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

নানা পদার্থের সমান মাপজোখ ভাগ-বাটোয়ার, দপ্তরীর হাতে আছে সমান মাপ দেবার রুল ও ছুরি, চোখ বুজে দপ্তর এমন সমান করে: কেটে চলে পাতা যে অনেক সময়ে ছাপার লেখার উপর দিয়ে লেখা চলে যায় সমানের টান । সমান মাপজোখ নিয়ে কাযের প্রতিরূপতার সৃষ্টি হ’ল—একটা দশ নম্বরের বুট আর একটা দশ নম্বরের বুটের প্রতিরূপ হ’ল, একটা চন্দ্রহার আর একটা চন্দ্রহারের সমান হ’ল, একটি সিদ্ধিদাতা গণেশ মূর্তি অন্য একটি সিদ্ধিদাতার অনুরূপ হ’ল। রূপ স্মৃষ্টি করছে যে সে একটু রূপকে দুটো করার দিকেই যাচ্ছে না কিন্তু তার দেওয়া একটা রূপু আর একট। রূপের সমকক্ষতা এবং প্রতিপক্ষত একই সঙ্গে করছে—এমন চমৎকার মান পরিমাণ দিয়ে গড়ছে সব রূপ রূপদক্ষ । এক রূপকে অন্ত রূপের সমকক্ষ করার কৌশল ছাটে সমানের কৌশলে নয়-অগাধ জলের তলা থেকে উঠলে পদ্মের মৃণাল, শতদল মেলিয়ে ধরলে আলোয় বৃহৎ মান পরিমাণ নিয়ে, অনেক মধু অনেক সৌরভ নিয়ে—এই যে পদ্ম ফুল এর কাছে এতটুকু একটি ঘাসের ফুল খাটো সব দিকে একথা বলা চল্লো না ; ঘাসের ফুল সে সমকক্ষ সে প্রতিপক্ষ হ’ল পদ্মের। মাপে খাটো নিশ্চয়ই একটা তারার কাছে খদ্যোত, কিন্তু তারার অনুরূপ নয় বলেই খদ্যোত সে হ’ল রূপে সমকক্ষ ও প্রতিপক্ষ তারার, কাযেই কবির মনে রস জাগালে খদ্যোতও । রূপজগতে ছটাে মাপ রয়েছে দেখি–একটা রূপের বহিরঙ্গীন মাপ আর একটা রূপের আভ্যন্তরীণ মাপ। ভাব নিয়ে যখন আলোচনা তখন এই আভ্যন্তরীণ মাপের কথা ওঠে। অন্তর বাহির দুই মিলিয়ে স্বয়ংরূপটি সম্পূর্ণতা পায়। রূপ সাগরের উপরের বিস্তার ও তলার রহস্য দুইই মেপে তবে পাই পরিপূর্ণ রূপটি ; সুতরাং নিজস্ব পরস্ক, বহিরঙ্গীন ও আভ্যন্তরীণ এষ্ট চার প্রকার মাপ হ’ল । - সব মানুষই তার নিজের হাতের সাড়ে তিন হাত দীর্ঘ, মামুযের নিজের মুখমণ্ডল তারি নিজের এক বিঘত,—এমনি কতকগুলি রয়েছে, প্রমাণসই মানুষের মান পরিমাণ যা সব মানুষের পক্ষেই সাধারণ মাপ, এ ছাড়া দেখা যায় যে মানবশিশুর বেলায় মাপ কিন্তু একটু আধটু তফাৎ হ’ল—ছেলের মাথাটা ছেলের এক বিঘতের খানিক যেশি। এর উপর