পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপের মান ও পরিমাণ HIS পরস্ব মান পরিমাণ ডৌল ইত্যাদি স্বভাবের দেওয়া—সেখানে নর সে নর–বানরও নয় দেবতাও নয়, মাদার গাছ সেখানে মাদার গাছই— আম নয় জাম নয় স্বর্গের মন্দারও নয়। হিন্দুধর্ম চাইলে দিব্যমূর্তি, কিন্তু যে মূর্তি গড়বে না তার কাছে, যে প্রতিমা-লক্ষণ লিখবে না তার কাছে দিব্য রূপটি আপনার মান পরিমাণ নিয়ে বর্তমান রয়েছে, কাজেই অদিব্য মান পরিমাণ ভেঙে গড়া চলতি হ’ল । প্রতিমা দেওয়ার বেলায় শাস্ত্রকার বলেন, “প্রতিমাকারকে মৰ্ত্ত্যো যথা ধ্যানরতো ভবেৎ । তথা নাম্যেন মার্গেণ প্রত্যক্ষেণাপি বা খলু।” প্রত্যেক রূপ ও তার মান পরিমাণ আদি একেবারে বর্জন করা কেমন করে হয় মানুষের দ্বারা । লিখলেন বটে শাস্ত্রকার “নান্তোন মার্গেণ”, শুধু ধ্যান ধরে আপনাতে আপনি ডুবে থাকা চল্লো কই । অরূপের অব্যক্তের ধ্যান অলৌকিক আধ্যাত্মিকের ধ্যান সন্ন্যাসী সে করতে করতে একটা তুরীয় অবস্থাতে গিয়ে পৌছে আনন্দে ভেল হ’য়ে বসে’ থাকে কিন্তু সেই রকম ধ্যানের পথ ধরে রূপ-রচনা অসম্ভব কোন কিছুর। সকালে উঠে প্রাতঃসূর্যের ধ্যান মুরু করলেম স্থির হয়ে চোখ বুজে, পাঠশালের ছেলেরা পড়তে যেতে দেখলে—ঋষি মশায় বসেন ধ্যানে, কিন্তু ঋষি আফিঙের গুলির ধ্যান করছেন, না আলোর গোলার ধ্যান করছেন, না মাখম মিছরীর ধ্যান করছেন—কেউ কিছু বুঝলে না যতক্ষণ না ঋষি ধ্যানকে ভাষা দিলেন—“জবাকুমুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্ব্যতিং,” কিংবা ভৈরবীতে ঋষি তান ধরলেন সূর্যস্তবের, কিংবা তুলি ধরলেন ঋষি —লিখলেন জবাফুলে সূর্য মিলিয়ে দিব্যাদিব্য মূর্তি। এই ভাবে একের ধ্যান স প্রমাণ করলে আপনাকে অন্তের কাছে। প্রতিমা সে প্রতিম হ’ল, আর্টিষ্টের ধ্যানের গোচর রূপের উপরে নির্ভর করে তবে পেলেম অরূপের রূপ। এখানে দুই অসমান–রপ ও অরূপ মিলে’ হ’ল এক । কল দিতে পারে একটার প্রতিরূপ ঠিক আর একটি তেমনি, আর্টিষ্ট তা দিতে পারে না ; আর্টিষ্টদের প্রতিমা অপরিমেয় রসকে পরিমিতির মধ্যে ধরে দিচ্ছে রসরূপ একটি একটি। রসকে ধরতে হ’লে রসের আলম্বনটির মান পরিমাণ কেমনটি হওয়া চাই তা আর্টিষ্টেরই ভাববার বিষয়, যেমন প্রাতঃকালের বর্ণন দিতে হ’লে বড় ছন্দে বা ছোট ছন্দে