পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৫২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

লিখবো, কি কি কথা কেমন করে কোথায় বসাবে—এ সবের হিসেব কবির হাতে ছেড়ে দেওয়া রইলো। আর্টিষ্টের মনোগত তাকে রূপ দিতে হ’লে আর্টিষ্টের মনোগত মান পরিমাণ প্রয়োগ করা, চাই। এই ভাবে অনেকগুলো মনোমত মান পরিমাণ দিয়ে মনোগত অনেক যখন স্বষ্টি করলেন রূপ-সাধকেরা–তখন সে গুলো বিচার করে পরীক্ষা করে হ’ল শিল্পশাস্ত্রের প্রতিম লক্ষণ মান পরিমাণ ইত্যাদি লেখা। আর্টিষ্টের মনোগত জনে জনে বিভিন্ন স্বতরাং মনোগত মান পূরিমাণ সেও ব্যক্তিগত এবং বিভিন্ন হ’তে বাধ্য। স্থির প্রতিমা নিয়ে ধমের কারবার, মান পরিমাণের অস্থিরতা রাখলে সেখানে কাৰ্য চলেই না সুতরাং ব্যক্তিগত ভাবের উপরে প্রতিমা-লক্ষণ ছেড়ে রাখা চল্লো না, এই মাপ এই লক্ষণ এই দেবতা এমনি বাধাবাধির কথা উঠলো এবং শাসন হ’ল—“নান্যেন মার্গেণ’ । এই যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মাপজোখ, তার সঙ্গে রীতিমত শাস্ত্রীয় শাসন যা প্রতিমার চোখের তার ঠোটের হাসি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ভঙ্গি ইত্যাদিকে একটু এদিক ওদিক হ’তে দিলে না, তাতে করে চুল তফাৎ হ’ল না মূর্তিটির প্রথম সংস্করণে ও দ্বিতীয় এবং পর পর তার অসংখ্য সংস্করণে, এতে করে পূজারীর কায ঠিকমত হ’ল কিন্তু আর্টের কাযে ব্যাঘাত এল। শাসনের জোরে মানুষের ক্রিয়া হ’য়ে উঠলো কল তবে চল্লো যেমন যুদ্ধের কায, তেমনি ধমটি প্রচার করতে শিল্পজগতে কতকগুলি আর্টিষ্ট ফৌজ স্থষ্টি করলেন শিল্পশাস্ত্রকার। বন্দুকের টোট একটার মতো যেমন দশ হাজারটা, ঠিক তেমনিভাবে একটি প্রতিমার দশ হাজার রকম প্রতিবিম্ব স্মৃষ্টি করলে কি গ্রীস কি ভারত কি বা চীন কি বা ঈজিপ্টের কারিগরের যতদিন তারা শাস্ত্র মেনে প্রতিমা গঠন করলে ; এর অন্যথা হ’ল বুদ্ধমূর্তি গঠনের বেলায় যিশুর ছবি আঁকার বেলায়। এমনি থেকে থেকে শাস্ত্রছাড়া প্রতিমা ও মান পরিমাণ আবিষ্কার করতে হ’ল এক এক আর্টিষ্টকে, তখন সেই মূর্তি হ’ল আদর্শ এবং তাই থেকে । এল আবার শাস্ত্রীয় মাপ—বুদ্ধের যিশুর রামেসিসের। এই সব দেখেই শিল্পশাস্ত্রকার বলেছেন যে পূজার জন্য যে সব মূর্তি তারি কেবল লক্ষণ ও মাপ লেখা গেল, অন্ত সকল মূর্তি যথেচ্ছ গড়তে পারেন শিল্পী মনোমত মাপজোখ দিয়ে। এই যথেচ্ছ গড়ার ছাড়পত্র নিয়ে মান পরিমাণ ডৌল বর্ণ ইত্যাদি