পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৫৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

হাসি কিন্তু সেই ঘোড়ার হাসির সঙ্গে সঙ্গে মানুষটির নাক মুখ চোখ এবং সারা মুখমণ্ডলের রেখাগুলো আপনাদের মান পরিমাণ মিলিয়ে তবে হয় কিমাকার একটা রাস্কুসে চেহারা । যেমন যখন কিম্পুরুষ দিতে হ’ল তখন মানুষ আর পাখীর মান পরিমাণ মেলাতে হ’ল সৌষ্ঠব দিয়ে যাতে করে কখনো মানুষের মাথার মাপে পাখীর দেহের মাপ হ’ল, কখনো এর উল্টোটা হ’ল, ও সেই সঙ্গে কমলো বাড়লো বাকলে চুরলে ডেল রেখা ইত্যাদি সবই। এখন লক্ষ্মী সরস্বতী কিংবা উমা দেবী—কিমাকৃতির মান পরিমাণ হিসেব কেতাব কিছুই খাটলে না এখানে, মানুষের স্বাভাবিক মান ধরা চল্লো না হুবহু। ভাটের বর্ণনায় বলা গেল বধ মানের বিদ্যাকে রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী’, হিন্দুমতে ঘরের গিনীকে গৃহলক্ষ্মী বলাও চল্লে, কিন্তু এদের একটি একটি প্রমাণসই মমর মূর্তি কি ফটাে প্রতিষ্ঠা করে লক্ষ্মী সরস্বতী পূজো করার কায চালানো গেল না। দেবপ্রতিম মানুষ হ’লে হ’ল না দোষের, কিন্তু মানুষপ্রতিম দেবতা হ’লেই গোল বাধলে কাযের বেলায় । রামায়ণের হনুমান সাধারণ মুখপোড়ার মাপে গড়লে ভুল হয়—অসাধারণ মাপ চাই অনন্যসাধারণ হনুমানের জন্তও । করকমলেষু চরণকমলেষু এই হাত এই পা-কেই বলা চল্লো চিঠিতে, কিন্তু আঁকার বেলায় গড়ার বেলায় সাধারণ হস্ত ও পায়ের মাপটতে অদল বদল ঘটাতেই হ’ল, না হ’লে ঠিক রূপ পেলে না ঐ ছটি জিনিষ। এইভাবে পেলেম কলে ছাটা রূপের বেলায় শাস্ত্রমতে সমান মাপজোখ যা ধরে এককে হাজারবার আবৃত্তি করা চল্লো । শাস্ত্রলিখিত রাক্ষসী-প্রতিমার মান পরিমাণ সেটি ধরে কৌমার কি বামন মূর্তি গড় চল্লো না, এইজন্য স্বতন্ত্র গোটাকতক মাপ রইলো—দশতাল দ্বাদশতাল নবতাল অষ্টতাল প্রভৃতি—যেমন কবিতার ত্রিপদী চৌপদী ইত্যাদি নানা ছাদ, যেমন সঙ্গীতে একতাল। চৌতালা তেতাল নানা ঠেকা, এর রূপ সমস্তকে ঠেকিয়ে রাখলে সুনির্দিষ্টতার মধ্যে—বাড়তে দিলে না কমতে দিলে না দৈর্ঘ্যে প্রস্থে কোন দিকেই। দ্বাদশতাল মানুষের পক্ষে অসাধারণ, কিন্তু যে রাক্ষসের কল্পনা করছি তার পক্ষে দ্বাদশ কিংবা তার বেশিও খাটে মাপ। সাধারণ মানুষ