পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. डॉड्वं ৩৬১ হয় কেননা সেটা ভাবের প্রতীক করে গড়া হয়েছে বলেই, কিন্তু বেশ করে পোড়ানো একখানা এগারো ইঞ্চি ইট বা টালি তার সঙ্গে ভাব হওয়া শক্ত—সেটা ভাবের বস্তু নয় বলেই । আকাশ থেকে ঝরে পড়া এক পশলা জল, চোখের কোণ থেকে গড়িয়ে পড়া এক বিন্দু অশ্রু— ভাবের বস্তু এরা, কিন্তু নোনা ধরা দেয়াল থেকে খসে’-পড়া এক চাংড়া বালি ভাবের বস্তু নয়, অথচ নদীর বালুচর—সেখানে বালি একটা ভাবের স্বজন করলে। বর্ষার শেষে আকাশে ভাসছে এক টুকরো মেঘ—সারা বর্ষার ভাবটা তাকে তখনো রাখলে মনোহর করে : পুরোনো শালের চমৎকার টুকরো পুরোনো ছবি মূর্তি চিনের বাসনের টুকরো যে ভাবে মনোহর তার চেয়েও ভাব-সম্পদে মনোহর ঐ ছেড়া মেঘের একটি খণ্ড। কাজেই বলি ভাবের প্রতিম যেটি হ’ল সে অখণ্ড ভাবেও যেমন খণ্ড ভাবেও তেমনি রস ও ভাবের বস্তু হ’য়ে রইলো। একটি ইটের পাজা—সে জাগাচ্ছে ভাব, একটা পাথরের স্তৃপ পিরামিড বা পাহাড়—তারা জাগাচ্ছে ভাব, একটা ভাঙা বাড়ী— সে জাগাচ্ছে ভাব, কিন্তু একটা ভাঙা টালি বা ইট সে ঝরা ফুলের পাপড়ি একটি যেমন ভাবের বস্তু তেমনতরো ভাবের বস্তু বলে’ চলতে পারলে না । পুরো মানুষটা কি বাচা কি মর দুই অবস্থাতেই ভাবের সঙ্গে এক হ’য়ে আছে। শুধু মানুষ কেন সব জানোয়ারের বেলাতেই এই কথা । কিন্তু মরা মানুবের কি বন মানুষের হাড়—তার সঙ্গে ডাক্তারেরও পুরোপুরি ভাব হয় কি না সন্দেহ, অথচ কঙ্কাল-মালিনী তাকে প্রতিমাতে ধরেছে আর্টিষ্ট ভাব দিয়ে কত বার কত ভাবে কত ছাদে তার ঠিক নেই । যাদুকরের সঙ্গে জড়িয়ে বন মানুষের হাড় জাগায় একটা ভাব । ভাবের ইতর-বিশেষের কথা ছেড়ে দিয়ে দেখ—এক থলি টাকা দেখে যে ভাব হয়, এক থলি মোহর কি একখান কোম্পানীর কাগজ দেখে ভাবট। সেই একই রকম হয়, কেবল মাত্রাট বেশি হয় মাত্র। যে রস দেয় খাদ্য সে রস দেয় না অর্থ, এক থাল মোয়া সম্পূর্ণ অন্য ভাব দেয় এক থলি মোহর থেকে। যে সব জিনিষ নিয়ে মানুষ খেল্লে যাদের সঙ্গী করে পেলে লীলায় এবং কাজেও বটে, এমন কি যাদের চিবিয়ে খেয়ে ফেল্পে পর্যন্ত, তাদের সঙ্গেই ভাব হ’য়ে গেল মানুষের—একটা কোন না কোন রকমের ভাব । ধুলো নিয়ে খেলে, ধুলো তুলে’ মুখে পোরে ছেলে—ধূলে-কাদার সঙ্গে O. P. 14—46