পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৬২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

তার রকম রকম দিক দিয়ে ভাব, এমনি টাকার সঙ্গে ভাব হ’ল কারু জুয়োখেলার দিক দিয়ে, কারু খাওয়া-পরার গাড়ী-ঘোড়ার স্বপ্নের দিক দিয়ে। খুটিনাটি তারতম্য নিয়ে দেখতে গেলে দেখি রসের রকম ভাবের রকম অনেকগুলো,--রস কেবল নয়টা নয়, রস অনন্ত, ভাবও গোটাকতক নয়, ভাব অনন্ত । রূপের বেলায় শাস্ত্রকার বয়েন “রূপভেদাঃ”—লক্ষ্য রইলো রূপে রূপে ভেদ নির্দেশ করা। মান পরিমাণের বেলায় তেমনি বল্লেন “প্রমাণানি”—বহুবচন দিয়ে নির্দেশ করা হ’ল ভিন্ন ভিন্ন রূপের জন্য বহু প্রমাণ। ভাবের বেলায় বল্লেন ‘ভাবযোজনমূ--রূপকে ভাবের সঙ্গে যুক্ত করা চাই, ভাব যোজনা করতে হবে রূপে। এতে করে: বোঝাচ্ছে যে ভাবে রূপের সঙ্গে তার মান পরিমাণকে আমরা পেয়ে যাচ্ছি সে ভাবে ভাবকে পাচ্ছি না—বস্তুরূপ রয়েছে একঠাই, ভাব রয়েছে অন্তষ্ঠাই । বলে থাকি ভাবযুক্ত কথা, ভাবযুক্ত রূপ, ভাবযুক্ত লেখা, ভাবযুক্ত সুরসার ছবি মূর্তি, কাযের সময় কিছু একটা দেখে বলিও আমরা এটা ভাবযুক্ত অন্ত কিছু সেটি ভাবযুক্ত নয়। সকালের ভাব সন্ধ্যার ভাব দিনের ভাব রাতের ভাব এ সব বুঝতে দেরী হয় না আমাদের, জীবনটা দিন রাতের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে ওদের সঙ্গে খানিক ভাব করে নিয়েছে। এমনি আরো জগৎ শুদ্ধ জিনিষ কারু সঙ্গে কাজের সম্পর্ক কারু সঙ্গে বা বাজে একটা সম্বন্ধ নিয়ে চেনাশোনা ও পরিচয় করে যাচ্ছি আমরা, চেনা পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গেই যাদের কাছে পাই তাদের ভাবের খানিকট পেয়ে যাই সেই সূত্র ধরে ক্রমে বন্ধুতা থেকে আত্মীয়তা পর্যন্ত ঠেকে গিয়ে ভাব হয় উভয় পক্ষে। অবসরের অভাব ভাব বোঝার ব্যাঘাত ঘটায় অনেকক্ষেত্রে—কেরানীর অবসর নেই সকাল সন্ধ্যা অন্তরে অন্তর মিলিয়ে ভাব করে নেওয়া, কবির সে অবসর আছে। সামান্য অবসর সেখানে দু’ একদিক দিয়ে অল্পভাব, অনেকখানি অবসর সেখানে বহুদিক দিয়ে অনেকখানি ভাব । সহজে ভাব করতে চট করে ভাব ধরতে পাকা থাকে এক একজন—তারাই ভাবুক। পূজোর কনসেসন পেয়ে যেন আমরা সবাই ছুটেছি নতুন নতুন দৃশু ও দেশের মধ্যে দিয়ে নতুন নতুন জিনিষ দেখতে দেখতে, সবাই কিছু আমরা ভাবুক নয়, সুতরাং ভাব হ’য়েও হ’ল না আমাদের যা দেখছি যা শুনছি যা নাগালের