পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৮৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

হ’ল—‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া’, এটার মানে এই যে এই সাদৃশ্ব ধরে সত্যই দেখা দিলে মেঘ। কত কী রূপ, তার বিচিত্রভাবে কখন কাকে কিসে সদৃশ হয়ে দেখা দেয়, তারই পরিচয় ছবির রূপে কবিতার রূপে গীতের রূপে ধরা দেয়। অজন্ত৷ গুহায় যারা অপসরার চিত্র লিখেছিল অপসরার কাধে দুখান করে ডান বেঁধে দেবার দরকারই তারা বোধ করেনি, মেঘকেই তার ডানা সদৃশ করে লিখে গেল। কী চমুৎকার উপমা দিয়ে বললে তারা—মেঘ-পাখনা অঙ্গরা! কবিতায় এ উপমা হয়তো এখনো চলেনি, কিন্তু চলবার বাধাও দেখিনে । তাজবিবির রৌজা-পাথরে গাথা মস্ত একটা কবরের ঢাকন মাত্র, কিন্তু সেটি অনেক কিছু উপমা পেলে । ধর আমরা কেউ উপমা দিলেম তাজের—যেন স্ফটিক পেয়ালায় বাদশাহী মদের শেয গাজলা, কিংবা তাজমহলটি দেখাচ্ছে যেন ঢার চারটে বাণবিদ্ধ মরুঞ্চে চাদের শ্বেত হরিণী কি বড়দিনের চিনিমোড়া কেক অথবা ময়রার দোকানের মুণ্ডি সন্দেশ। তবে অবশ্য সাদৃশ্য টান হিসেবে এরূপ ভাবে নিজের নিজের মনোমত উপমা দেওয়াতে বাধা দেবার কথা উঠতে পারে না, কিন্তু উপমার যোগ্যতা অযোগ্যতা নিয়ে তর্ক উঠবে সভাস্থলে । উত্তমাধম সব উপমাই যাচাই হয়ে তবে স্থান পাচ্ছে কাব্যে সাহিত্যে শিল্পে। - এই যাচাই হবার ফুটে যায়গা—তার একটা হ’ল রসিকের সভা অার একটা হ’ল মহাকালের বিচারালয়। এই কারণে কবিপ্রৌঢ়োক্তিসিদ্ধ অলঙ্কার উপমা ও সাদৃশ্য দেবার ব্যবস্থা দিলেন পণ্ডিতেরা। প্রাচীন অনেক সাদৃশ্য ও উপমা কালে কালে কবিপ্রৌঢ়োক্তির ছাড়পত্র পেয়ে গেছে, তেমনি নতুন উপমাও অনেক স্বষ্টি হয়েছে যা মুরু থেকেই জানিয়ে দিচ্ছে যে কালে কালে চলবে তারা। দিল্লীর লাড ঘোড়ার ডিম এর কেউ প্রাচীন উপমা নয়, কিন্তু সাদৃশ্য দেবার হিসেবে এমন দুটাে আধুনিক উপমা আর চমৎকার উপমা নেই বললেও চলে ভাষায়। গোমাতা’ অতি প্রাচীন সাদৃশ্ব পৃথিবীকে বোঝাতে, কিন্তু গ্লোবকে গোরুর আকৃতি দেওয়া হ’ল না, কিংবা এই প্রাচীন কবিপ্রৌঢ়োক্তি একে নিয়ে কাজ চললে না আর্টে, ও কেবল গো-রক্ষিণী সভার বিজ্ঞাপনে আর গো-ফল ব্ৰতে কাজ দিলে। মেলিন্‌স ফুডওয়ালার কাছেও গোমাতার সাদৃশু আদর