পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাদৃশ্য Wobro সময় সে কনক-কটোর পর্যন্ত এগোল। রূপের বাধা মানতে হয় রূপকারকে, কাজেই উপমার সাদৃশ্ব ইত্যাদির বেলায় এক গঙ্গাজল এক গণ্ডষের মধ্যে ধরার কৌশল আবিষ্কার করে নিতে হয় বেচারাকে। এখন এই সদৃশকরণের নানা উপায়ের মধ্যে প্রধান উপায়গুলোর একটু হিসেব নিই। একটা মোটামুটি বাইরের সাদৃশ্ব মানুষে মানুষে, মামুধে এবং বানরেও আছে, আবার এও দৈখি নাক মুখ চোখের বিসদৃশ ভাব ও রূপ নিয়ে এতে ওতে ভিন্নতাও রয়েছে। কোন বাঙ্গালী দেখতে হ’ল যেন সাহেব, কেউ. হ’ল কালৈ কাফ্রী, যে আছে নাছস মুছস গণেশ-ঠাকুর, বয়সে কিংবা ম্যালেরিয়ায় সে হয়ে গেল পোড়া-কাঠের সদৃশ। চালচলনের দিক দিয়েও রকম রকম সাদৃশ্ব আর উপমার আবির্ভাব হচ্ছে দেখি ; যেমন—অতিগজগামিনী কিংবা সঞ্চারিণী পল্লবিনী লতেব ! আঁকা মানুষটি হ’ল দেখা মানুষের সদৃশ। এই রূপটা রইলে প্রথম মহলে আকৃতিগত সাদৃশ্বের কোঠায়, তারপর হ’ল ছবির মানুষটি বসে আছে যেন সিংহ কি গরুড় পক্ষী—এ হ’ল ভাবভঙ্গিগত সাদৃশ্বের নমুনা। প্রথমে সাদৃশু—পুরোপুরি নকলের দ্বারা সম্পাদন করা চল্লেী, দ্বিতীয় বারে সাদৃশ্ব দেবার সময়ে মানুষের ভাবে আর ইতর জীবের ভাবভঙ্গিতে মেলানোর কথা উঠলো। এই দুই প্রকারের সাদৃশুতেই চিত্রকারের পূর্ব-দৃষ্ট রূপের জ্ঞানটি কাজ করছে । এতে করে’ ছবি কোথাও করে চল্লো দেখা মানুষের ভাবভঙ্গি নকল ও প্রতিকৃতি, কোথাও দেখা মানুষ দেখা জীবে ভাব ভঙ্গি মিলিত হয়ে দিলে একটি ভাবের প্রতিকাশ। বুদ্ধের নিজের মূর্তিটা কেমন ছিল না দেখা থাকলেও এই দ্বিতীয় উপায়ে নানা লক্ষণাক্রাস্ত নাক মুখ চোখের টানটােন দিয়ে পাথরের মূর্তিতে বুদ্ধত্বটুকু পরিষ্কার ধরে ফেলা চল্লো । তাজবিবির রৌজ সেখানে সদৃশকরণের স্বতন্ত্র কৌশল ধরলে আর্টিষ্ট, নারী-ভাব ফুটলো সেখানে তাজবিবির ভৌতিক দেহভঙ্গি ইত্যাদি বাদ দিয়েও । এই হ’ল উপমা দেবার বাহাদুরির চরম নিদর্শন স্থাপত্য শিল্পে, এমনি নিদর্শন আরও আছে দেশে বিদেশে নানা শিল্পকলার মধ্যে । সেদিন একখানা তলোয়ার দেখলেম, সেটি গ্ৰীক ভিনাস মূতির মতোই