পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শিল্প ও ভাষা
৫৭

‘আর কাল হৈল মোর কদম্বের তল
আর কাল হৈল মোর যমুনার জল।’

বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠলো কালো যমুনা তার ধারে কদমতলা, তার ছায়ায় সহচরী সহিত রাধিকা—

‘আর কাল হৈল মোর রতন ভূষণ
আর কাল হৈল মোর গিরি গোবর্দ্ধন।’

রাধিকার রত্ন অলঙ্কারের ঝিকমিকি থেকে দূরের কালো পাহাড়ের ছবি দিয়ে Landscapeটা সম্পূর্ণ হল, ছবি মিলে গেল কথার সঙ্গে, কান চোখ দুয়ের রাস্তা একত্র হয়ে সোজা চল্লো মনোরাজ্যে! এর পর আর ছবি নেই বর্ণনা নেই শুধু কথা দিয়ে বাচন—

‘এত কাল সনে আমি থাকি একাকিনী
এমন ব্যথিত নাহি শুনএ কাহিনী।’

এ বারে কথিত ভাষার ছবির সাক্ষাদ্দর্শন—

‘জলদ বরণ কানু, দলিত অঞ্জন জনু 
উদয় হয়েছে সুধাময়—
নয়ন চকোর মোর, পিতে করে উতরোল 
নিমিষে নিমিখ নাহি রয়।
সই দেখিনু শ্যামের রূপ যাইতে জলে!’ 

একেবারে নির্নিমেষ দৃষ্টিতে ছবি-দেখা কথার ভাষা দিয়ে! এইবার অঙ্গভঙ্গি আর চলার সঙ্গে কথার যোগাযোগ পরিষ্কার দেখাবো—

‘চলিতে না পারে রসের ভরে
আলস নয়ানে অলস ঝরে
ঘন ঘন সে যে বাহিরে যায়
আন ছলে কত কথা বুঝায়।’

চোখের সামনে চলাফেরা সুরু ক’রে দিলে কথার ভাষা অভিনয় করে নানা ভঙ্গিতে।

 চিত্রিত ভাষা কথিত ভাষা অভিনীত ভাষা এসব যদি এ ওর কাছে লেনা দেনা করে চল্লো তবে কথিত ভাষার ব্যাকরণ অলঙ্কারের সূত্র আইন কানুন