পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৭৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শিল্পের সচলতা ও অচলতা
৭১

কনক রচিত মৃত্তিকা শোভিত
পীযূষ পূরিত স্থির সরোবর॥
কল্পতরু তায় কিবা শোভা পায়
ফল ধরে যায় ধর্ম মোক্ষ আদি।
পত্র পুষ্প তার ভক্তি তত্ত্ব সার
কেহ নাহি আর তাহাতে বিবাদি॥”

মনের সমস্ত স্পর্শ ও সুরের সঙ্গে বিবাদ করে যেখানে বিবাদ বিসম্বাদ নেই এমন ব্রহ্মলোক বর্ণন হল—যেন সাত পুকুরের বাগান বাড়ীর ফটোগ্রাফ, তাও আবার অনেক খানি ঝাপ্‌সা, একটু অদ্ভুত রস পাওয়া যায় শুধু যেখানে কল্পবৃক্ষ গাছের ডালে ধর্ম মোক্ষ আর ভক্তিতত্ত্বের আম কাঁঠাল পেকে পেকে ঝুলছে! ভাষা চোস্ত হলে কি হয়, কথাগুলোকে তীরের মতে চালিয়ে দেবে যে গুণ তারি পরশ ঘটলো না মোটেই কবিতাটায়।

 খালি চোস্ত ভাষার দু একটা রূপ বর্ণন শুনিয়ে দিই, দেখ দেখি মনে গিয়ে পৌঁছয় কিনা—

“ভবজ অনুজরথ,  তা তলে বিনতা সুত
কোরে কুমুদ বন্ধু সাজে
হরি হরি সন্নিধানে  অলি রস পূরে বাণে
রমণী মুনির মন বান্ধে।
খগেন্দ্র নিকটে বসি  রাজেন্দ্র বাজায় বাঁশি
যোগীন্দ্র মুনীন্দ্র মূরছায়
কুন্তীর নন্দন মূলে  কশ্যপ নন্দন দোলে
মনমথ মনমথ তায়—’

মনে গিয়ে বাজলো না? আচ্ছা দেখ দেখি একটু মন দিয়ে—

“কিশোর বয়স  মণি কাঞ্চনে আভরণ
ভালে চূড়া চিকন বনান
হেরইতে রূপ,  সায়রে মন ডুবল,
বহু ভাগ্যে রহল পরাণ।”

মনে ধরেও ধরছে না? শব্দভেদী বাণে কিছু হল না, ব্রহ্মাস্ত্রেও নয়,