পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১০৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮৮
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

 যখন নীড়রচনার সময় আসে, তখন বৃক্ষকাণ্ডের নানাস্থানে ঘা মারিয়া ফাঁপা জায়গা খুঁজিয়া বেড়ায়। ফাঁপা স্থান পাইলে চঞ্চুটিকে কুড়ালীর মত ব্যবহার করিয়া পুনঃ পুনঃ আঘাত পূর্ব্বক অতি পরিপাটি সুগোল প্রায় তিন ইঞ্চি ব্যাসের একটি গর্ত্ত খনন করে। কোনও নিপুণ ছুতারও বোধহয় ওরূপ নিখুঁত গোলাকার গর্ত্ত কাঠে খুদিয়া উঠিতে পারে না। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসেই শাবক-উৎপাদনে তৎপর হয়। এই সময়ে ইহার চঞ্চুর আঘাতজনিত উচ্চ ঠকঠক্‌ ধ্বনিতে বাগান মুখরিত হইয়া উঠে।

 গাছের বিবর খননেই ইহারা যত নিপুণতা প্রকাশ করে। কিন্তু কোটরটির মধ্যভাগে কোনও প্রকার শয্যারচনা করে না। পাখীরা প্রায়শঃই নানারূপ দ্রব্য দিয়া নীড় আস্তৃত করিয়া একটি গদির মত ডিম্বাধার রচনা করে। কিন্তু ইহারা বৃক্ষকোটরের শক্ত মেজেই ডিম্ব ও শাবকের জন্য পর্য্যাপ্ত মনে করে। ইহাদের ডিম শ্বেতবর্ণের এবং সংখ্যায় এক একবারে তিনটি করিয়া হয়।

 সচরাচর যে কাঠঠোক্‌রা আমরা দেখিতে পাই তাহার পুরুষপাখীটির মস্তক ও ঝুঁটি উজ্জ্বল লাল। পৃষ্ঠের সম্মুখভাগ উজ্জ্বল পীতবর্ণ পশ্চাতের অংশ ও পুচ্ছ কৃষ্ণবর্ণ। ডানার পালক শ্বেত ও পীতবর্ণ এবং তদুপরি শ্বেত ফুটকিও থাকে। ঘাড়ের দুইপাশ শ্বেত হইলেও বহু কালো রেখায় বিচিত্রিত। স্ত্রীপাখীর দেহের বর্ণ পুরুষের মত, শুধু মস্তকটি কালো এবং তদুপরি শুভ্র রেখার ত্রিকোণ আঁকা। ইহাদের গ্রীবা দীর্ঘ হয়। প্রকৃতির খেয়ালে এই ব্যবস্থা কেন, তাহার কারণ বোধহয় আর ব্যাখ্যা করিয়া বলিতে হইবে না। ইহারা আদৌ সামাজিক পাখী নহে। একই বাগানে একটা বা একজোড়া পাখী ছাড়া অন্য কাঠঠোক্‌রাকে দেখা যায় না।

 ইহারা ঘনসন্নিবিষ্ট কাননমধ্যে নিকটবর্ত্তী গাছ হইতে গাছে