পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১০৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বসন্ত বাউরী

 যে দুইটী পাখীর বর্ণনা এই প্রবন্ধের অন্তর্গত, তাহাদিগকে বাংলার সর্ব্বত্রই বহুসংখ্যায় দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু ইহাদের বাংলা নাম আমি খুঁজিয়া পাই নাই। হিন্দী ভাষায় ইহাকে “বসন্ত্‌” বা “বসন্ত্‌ বাউরী” বলে। যেটা আকারে বৃহত্তর তাহাকে “বড়া বসন্ত্‌” এবং অন্যটাকে “ছোট বসন্ত্‌” বলে। “বাউরী” শব্দটা বোধহয় “বৌরাহা” শব্দের অপভ্রংশ। ইহার অর্থ উন্মাদ। বসন্তকাল আরম্ভ হওয়ার দিন হইতে সারা গ্রীষ্মকাল ইহাদের নিরবচ্ছিন্ন একঘেয়ে “টোংক্‌ টোংক্‌” ডাকে কান ঝালাপালা হইয়া উঠে। সেইজন্য ইহাকে “বসন্ত পাগল” বলা হয় কি না জানিনা। সেই হিসাবে আমি বাংলাতে ইহার “বসন্ত বাউরী” আখ্যাই গ্রহণ করিলাম। কেহ কেহ “বসন্ত বৈরী” চালাইতে চাহেন। ইহাকে বসন্তের শত্রু বলি কি করিয়া? এখন পাঠকের অভিরুচি। কোকিলের মত ইহাদিগকেও বসন্তের বার্ত্তাবহ বলা চলে, কেন না সরস্বতী পূজার সমসাময়িক কালেই ইহাদের কণ্ঠস্বর স্ফূর্ত্ত হইয়া উঠে।

 ইংরেজ একে বারবেট বলে। তবে যেটি আকারে বড় সেইটিকে গ্রীন বারবেট অথবা ব্ল্ ফেসেড্ বারবেট নামে অভিহিত করে। ছোটটিকে বলে—কপারস্মিথ্ কিম্বা ক্রিমজন ব্রেষ্টেড বারবেট। কাঁসারীদের পাড়ায় যেমন সারাদিন নিরবচ্ছিন্ন ঠং ঠং শব্দ শোনা যায়, আমাদের কাননে উপবনেও বসন্তকাল হইতে বর্ষাকাল পর্য্যন্ত এবং কখনও কখনও শীতকালেও ‘টংক—টংক—টংক’ ধ্বনি শুনা যায়। একচোটে পঁচিশ ত্রিশবার এইরূপ শব্দ হইয়া মিনিট দুইয়ের জন্য থামিয়া পুনরায় শব্দ আরম্ভ হয়। এবং ক্ষণমাত্র বিরামের পর