পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৪
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

ইহারা বৃক্ষশাখার অধোভাগে কোটরের প্রবেশ পথ তৈয়ারী করে। কাঠঠোক্‌রা গাছের খাড়া কাণ্ডে কোটর প্রস্তুত করে বলিয়া তাহাদের এ সমস্যা নাই। বসন্ত পাখীর খাড়া ডালে নীড় রচনা করার অভ্যাস নাই। ভূমির সঙ্গে সমান্তরাল ডালগুলিতেই এরা নীড় প্রস্তুত করে বলিয়া ইহাদিগকে ডালের তলদেশে নীড়ের প্রবেশ দ্বার রাখিতে হয়। ইহার এক একবারে দুইটী হইতে চারিটী পর্য্যন্ত শুভ্রবর্ণের ডিম পাড়ে।

 সাধারণতঃ পাখীরা একবার যে গাছের যে স্থানে নীড় রচনা করে, পরবৎসর যে সেই গাছের সেই স্থানে নীড় রচনা করিবে তাহা নহে। যদিও কতকগুলি পাখীর চরিত্রে এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। কিন্তু যে সব পাখী বৃক্ষ বা দেয়ালের গর্ত্তে বাসা প্রস্তুত করে, তাহাদিগকে উপর্য্যুপরি একই গর্ত্তে নীড় নির্ম্মাণ করিতে দেখা যায়। দোয়েল ও হুপোকে আমি এরূপ করিতে দেখিয়াছি। “বসন্ত” পাখীও তাহাই করে। প্রতি বৎসর কাষ্ঠ খোদনের পরিশ্রম কি সাজে? শুধু তাহাই নহে, পাখীদের শাবক সাবালক হইয়া জনকজননীর আশ্রয় পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলে, পক্ষীদম্পতিও নীড়টি পরিত্যাগ করে এবং বৃক্ষশাখাই সর্ব্বসময়ের জন্য আশ্রয় করে। “বসন্ত” পাখী কিন্তু কোটরটী পরিত্যাগ করিয়া যায় না। প্রজনন ঋতুর পরও শাবকরা যখন স্বাবলম্বী হইয়া জনকজননীকে পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যায়, তখনও বসন্ত-দম্পতি ঐ বৃক্ষকোটর মধ্যেই নিশাযাপন করিয়া থাকে। পাখীদের চরিত্রে এই বৈশিষ্ট্য বিরল।