পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বাঁশপাতি
১০৩

পাতি ভূমির উপর বড় একটা আসে না। সে উড্ডীয়মান অবস্থায় তাহার খাদ্য শিকার করে, সেই জন্য পলায়মান কীটপতঙ্গের পশ্চাদ্ধাবন কালে দ্রুতগতি এপাশ ওপাশ ও ডিগবাজী খাইতে ইহাকে অহরহ দেখা যায়। ভূমির অতি নিকটে আসিয়া তৃণ-শস্যাদির শীর্ষদেশ হইতেও সে উড়ন্ত অবস্থাতেই পতঙ্গ ধরে। ফিঙ্গেরাও ইহারই মত উড্ডীন অবস্থায় শিকার ধরে; কিন্তু প্রয়োজন হইলে মাটীতে আসিয়া বসিতে দ্বিধা বোধ করে না, যদিও তাহার দীর্ঘপুচ্ছটী কিঞ্চিৎ অসুবিধার সৃষ্টি করে। কিন্তু বাঁশপাতি আদৌ মাটির উপর উপবেশন করে না। ইহাদের পদাঙ্গুলী যুগ্ম হওয়াতে বোধ হয় মাটীতে বসিতে ইহার পারে না। সুতরাং মাঠের মধ্যে যে দুই একটী বৃক্ষ থাকে তাহার পত্রবিরল ডালের উপরই ইহারা বিশ্রাম করে। কানন মধ্যেও প্রবেশ করে না আবার গাছের ভিতরও যায় না। মুক্তস্থানই এদের বিচরণ ক্ষেত্র। আবার খঞ্জনের মত মনুষ্যসান্নিধ্য পরিহার করিয়া চলার কথা ইহারা মোটেই ভাবে না।

 ইহারা নাকি মৌমাছি খায় কেন না ইহাদের ইংরাজি নাম “গ্রীণ বী-ইটার”। তবে একমাত্র মৌমাছিই ইহাদের ভক্ষ্য নহে। যদি তাহা হইত, তাহা হইলে ইহাদিগকে আমরা সুনজরে দেখিতে পারিতাম না কেননা, মানুষের একট অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য, মধু, সঞ্চয় করে বলিয়া মৌমাছি মানুষের মিত্রস্থানীয়। উপরে উল্লেখ করিয়াছি যে ইহাদের বিচরণ ক্ষেত্রের একটু বৈচিত্র্য আছে। উড়ন্ত অবস্থায় শীকার ধরিতে হয় বলিয়া ইহারা পল্লবনিবিড় কানন মধ্যে থাকিতে পারে না। আবার উন্মুক্ত প্রান্তরও ইহাদের বাসোপযোগী নহে। তাই বাগানের প্রান্তে যেখানে খানিকট খোলা স্থান আছে সেই স্থানই ইহাদের প্রিয় আড্ডাস্থান। বৃক্ষাদির নাতিউচ্চ ডালগুলিতে যাইয়া ইহারা বসে এবং সেখান হইতে শূন্যপথে নিজেকে প্রক্ষিপ্ত করিয়া পতঙ্গের