শীতকালে কোকিলকে বহুবার লক্ষ্য করিয়াছি। উত্তরবঙ্গ সম্বন্ধে যদি কেহ লক্ষ্য করিয়া থাকেন, আমাকে জানাইলে বাধিত হইব।
এ বিষয়ে আমার ধারণা এই যে কোকিল শৈত্যের আধিক্য সহ্য করিতে পারে না। সেইজন্য উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে শীত অত্যন্ত তীব্র হয় বলিয়া কোকিল ঐ সময় সেখান হইতে দক্ষিণে ও পূর্ব্বে অপেক্ষাকৃত কম ঠাণ্ডার দেশে চলিয়া আসে। দক্ষিণ বঙ্গের শীতে মোটেই তীব্রতা নাই, সুতরাং এ অঞ্চল ছাড়িয়া যাইবার প্রয়োজনীয়তা সে বোধ করে না। আমাদের দেশের পরিচিত কোকিলদের মধ্যে “শাহী বুলবুল” (পরে বর্ণনা আছে) একমাত্র যাযাবর বা মাইগ্র্যাণ্ট কেন না ইহা হিমালয়ে থাকে এবং শুধু বর্ষাকালেই এ দেশে চলিয়া আসে।
আমরা যাকে কোকিল বলি সে পাখী কিন্তু মোটেই ইংরেজদের ‘কুক্কু’ নহে। ইংরেজ লেখকরা সেইজন্য এই পাখীকে তাঁদের কেতাবে কুক্কু বলেন না, হিন্দী “কোয়েল” শব্দই তাঁদের ভাষায় গ্রহণ করিয়াছেন। বৈজ্ঞানিক মতে কোকিলের গোষ্ঠি বেশ বৃহৎ এবং বাংলা দেশে এই গোষ্ঠির কোকিল ছাড়া একাধিক পাখী বেশ পরিচিত। ইহাদের নাম নিম্নে দেওয়া হইল।
(১) পাপিয়া—পাখীটি দেখিতে বাজের মত সেইজন্য ইহার ইংরাজী নাম হক-কুক্কু।
(২) “বউ-কথা-কও”—একেই ইংরেজরা “দি ইণ্ডিয়ান কুক্কু” বলেন, কেন না বিজ্ঞানমতে ইহাই ইংরেজের “কুক্কু” পাখীর ভারতীয় সংস্করণ।
(৩) “শাহী-বুলবুল”—ইহার ইংরেজী নাম “দি ইণ্ডিয়ান ক্রেষ্টেড্ কুক্কু”। পশ্চিম ভারতে কোনও কোনও স্থানে ইহাকে “কালা পাপিহা” বলে। ইহার নাম হইতেই বুঝা যাইতেছে যে