পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৫৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কোকিল
৩৯

করে। ইহাকে দেখিলে কোকিলের সহিত ইহার যে কোনও সম্পর্ক আছে তাহা বুঝা শক্ত। ইহারা বেশ হৃষ্টপুষ্ট, একটি দাঁড়কাকের মত আয়তন। পুচ্ছের অগ্রভাগ বেশ চওড়া এবং এই সুদীর্ঘ পুচ্ছটির জন্য দাঁড়কাক অপেক্ষাও ইহাকে বড় দেখায়। ইহাদের সর্ব্বাঙ্গ ঘন কালো, শুধু ডানাদ্বয় ঘন বাদামী বর্ণের। চক্ষু উজ্জ্বল লাল, কোকিলের মত। ইহারা ভিজা স্যাঁতসেঁতে জমিতে ধীর পদক্ষেপে বিচরণ করিয়া কীটাদি সংগ্রহ করে। প্রায়ই ইহাদের জলাশয়ের নিকটবর্ত্তী ঘন ঝোপের নিকটই মাটির উপর দেখা যায়। অবশ্য বাগানে ও ডালে ডালে এরা থাকে, তবে খুব উচ্চ ডালে যায় না। নিম্ন শাখা মধ্যেই এক বৃক্ষ হইতে বৃক্ষান্তরে গমনাগমন করে। সারাদিনই মাঝে মাঝে ‘গুপ্‌-গুপ্‌’ এইরূপ একটা গম্ভীর শব্দ করে। জোড়ায় জোড়ায় ইহারা বাস করে এবং দাম্পত্যপ্রেম ইহাদের অত্যন্ত প্রগাঢ়। একটি মারা গেলে আর একটি নাকি অন্য সঙ্গী গ্রহণ করে না। শুনিয়াছি ধনেশপাখীর মাংসের মত ইহাদের মাংস বাতরোগীর পক্ষে ভাল। পশ্চিম অঞ্চলে ইহাকে “মহুকল” বলে। ইহার সাপের শত্রু। এ কারণে ইহাদের নির্ব্বিবাদে বাস করিতে দেওয়াই সঙ্গত। ইহারাও লোকালয়ের মধ্যেই বাস করিতে ভালবাসে।

 কাণাকূয়া ছাড়া এই গোষ্ঠির পাপিয়া, বউ-কথা-কও এবং শাহী-বুলবুল কীটভূক পাখী। ইহারা সকলেই আবার এমন একটা কীট ভক্ষণ করিতে ভালবাসে যাহা অন্য পাখী স্পর্শ করিতেও সাহস পায় না। বর্ষাশেষে এদেশে বহু শুঁয়া পোকার প্রাদুর্ভাব হয়। অনেক শুঁয়া আবার বাগানের ফলবৃক্ষের পাতা খাইয়া গাছ নষ্ট করে। এই সব শুঁয়া উক্ত কয়প্রকার পাখীর প্রিয় খাদ্য। সুতরাং ইহারা মানুষের হিতকারী।

 ইহাদের মধ্যে শুধু “কোকিলই” নিরামিষাশী। সে সম্পূর্ণ